কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে ব্রাহ্মণপাড়া থানা পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে শনিবার সকালে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। গ্রেপ্তারকৃত মনির খাঁন চৌধুরী (৪৫) উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধান্যদৌল চৌধুরী বাড়ীর মোঃ ইসলাম খাঁন চৌধুরীর ছেলে।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ বছর আগে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধান্যদৌল চৌধুরী বাড়ীর মোঃ ইসলাম খান চৌধুরীর ছেলের সাথে পার্শ্ববর্তী কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের বেলতলী গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে রাবেয়া আক্তার (৩৬) এর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
তাদের বিবাহিত সংসারে দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। যাদের বয়স যথাক্রমে ৯ বছর ও ৫ বছর। মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিয়ের সময় স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ৮ লক্ষ টাকা বাবা আব্দুল মান্নান খরচ করে।
বিয়ের ২ মাস পর স্বামী বিদেশ যাবার জন্য যৌতুক দাবি করলে মেয়ের সুখের জন্য আরো ৪ লক্ষ টাকা বাবা আব্দুল মান্নান জোগাড় করে দেয়। কিন্তু বিদেশ না গিয়ে এই ৪ লক্ষ টাকা বন্ধুদের সাথে জুয়া ও মাদক সেবন করে খরচ করে ফেলে।
ছোট ছেলে জন্মের পর শ্বশুর ইসলাম খাঁন চৌধুরী যৌতুকের জন্য রাবেয়া আক্তারকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ও মারধর করলে মেয়ের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে পর্যায়ক্রমে আরো ৯-১০ লক্ষ টাকা প্রদান করেন।
তারপরও স্বামী মনির খাঁন চৌধুরী মাদক, জুয়া সেবন করে ও কোন কাজকর্ম করে না। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ আগস্ট (মঙ্গলবার) বিকালে স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য আরো ২ লক্ষ টাকা আনার কথা বললে স্ত্রী প্রতিবাদ জানালে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্য্যায়ে মনির খাঁন চৌধুরী স্ত্রীর তলপেটে লাথি দিলে সে পড়ে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে কান্না করতে থাকে। এসময় মনির খাঁন চৌধুরী তার ঘরে থাকা হকিস্টিক দিয়ে এলোপাথাড়ি স্ত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।
তার চিৎকারে বিবাদী মনির খাঁন চৌধুরী আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আয়রন করার ইস্ত্রি দিয়ে কারেন্টের মাধ্যমে রাবেয়া আক্তারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে।
এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রাবেয়া আক্তার বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মনির খান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করে। এব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম আতিক উল্ল্যাহ সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।