রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে ফের ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেটে মানববন্ধনে তারা এই আল্টিমেটাম দেন।
মানববন্ধনে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আপনারা জানেন আমরা তার আগে ৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছি কিন্তু আমাদের কোনো ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হয়নি।যার কারণে আমরা আজকেও শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা এখানে দাঁড়িয়েছি। এই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে যদি ভিসি নিয়োগ না দেওয়া হয় তাহলে আমরা মর্ডান মোড় ব্লক করে উত্তরবঙ্গের সাথে সারা দেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করব। আমরা আবারো বলতে চাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কোনো বৈষম্য চলবে না।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান সূচনা যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়েছে সেখানে এখনো ভিসি নেই। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আন্দোলনের নতুন মাত্রা পায়। আজকে এখনে দাঁড়িয়ে খুব দুঃখের সহিত বলতে হয় আমরা বৈষম্যের শিকার। আমাদের ভিসির জন্য মাঠে নামতে হয়। আমরা শিক্ষার্থী আমাদের প্রথম কাজ আমরা পড়াশোনা করব দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখব। কিন্তু আমাদের সেই জায়গাটি স্থবির হয়ে পড়েছে। আমরা দ্রুত ক্লাস পরীক্ষায় ফিরতে চাই।
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.মো.ইলিয়াছ প্রামাণিক বলেন, জুলাইয়ের যে গণঅভ্যুত্থান যেখানে আবু সাঈদ যদি এইভাবে না মারা যেত তা এই পর্যায়ে যেত না। এইটি কিন্তু ছিল একটি কোটার আন্দোলন। আবু সাঈদের মৃত্যুর পর তা গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। সরকার পতন হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস শপথ গ্রহণের পর উনি একটি ইউনিভার্সিটি ভিজিট করেছেন সেটি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি আবু সাঈদের মাজার জিয়ারত করেছেন।তার প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন। আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। আমাদের দাবি গুলো শুনেছেন। অনেক দিন হয়ে গেল কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা এখন পর্যন্ত কোনো ভাইস চ্যান্সেলর পাইনি।
ভাইস চ্যান্সেলর না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ও একাডেমিক স্থবিরতা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা পড়ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ হয়েছে। আমরা চাই আমাদের যোগ্য একজন ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেওয়া হোক।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি অতীতে যে কয়জন ভাইস চ্যান্সেলর এসেছেন কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য কাজ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় যে পর্যায়ে যাওয়ার কথা ছিল,রংপুরের মানুষের যে স্বপ্ন ছিল তা পূরণ হয়নি। স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার কারণ অতীতের ভাইস চ্যান্সেলরদের অযোগ্যতা। আমরা সমনের দিনে একজন যোগ্য ভাইস চ্যান্সেলর চাই।যিনি আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভাইস চ্যান্সেলর হবে শিক্ষকদের ভাইস চ্যান্সেলর হবে,সাধারণ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ভাইস চ্যান্সেলর হবে।অতীতে যে ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন তারা দলীয় ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। তখন তারা একটা দল বা একটা গ্রুপকে নিয়ে চলত৷ তারা সুবিধা নিত। বৈষম্য আর বঞ্চনার শিকার হত সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।