মার্চ ৬, ২০২৫

বৃহস্পতিবার ৬ মার্চ, ২০২৫

বিশ্ববাজারে ক্রমশ বাড়ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা

Garment Workers
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। ক্রেতাদের আস্থা ফিরে আসার ফলে এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সোর্সিং কার্যক্রম সম্প্রসারণের ফলে এই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) পোশাক আমদানি (জানুয়ারি-ডিসেম্বর ২০২৪) ১.৫৩% বৃদ্ধি পেয়ে ৯২.৫৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। মোট আমদানির পরিমাণ ৮.৯৮% বাড়লেও গড় ইউনিট মূল্য ৬.৮৩% কমেছে। এই মূল্য হ্রাস বাংলাদেশসহ প্রধান সোর্সিং দেশগুলোর ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।

গত বছর (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বাংলাদেশ থেকে ইইউতে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৯.৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে ছিল ১৮.৮৫ বিলিয়ন ডলার। ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪.৮৬% বেড়েছে। রপ্তানির পরিমাণ ১০.১৮% বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের অবস্থার তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে, ইউনিট মূল্যে ৪.৮৪% হ্রাস পাওয়ায় লাভের পরিমাণ ধরে রাখা এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

মূল্য সংযোজিত পোশাক উৎপাদন, শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা মান এবং উৎপাদনকারী ও শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে রপ্তানির পরিমাণ ও মূল্য বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। এর মাধ্যমে ক্রেতাদের আস্থা বেড়েছে, ব্যবসায়ের পরিবেশ উন্নত হয়েছে এবং রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে।

২০২৪ সালের শেষ তিন মাসে (অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর) বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। রপ্তানি বৃদ্ধি এবং এই ইতিবাচক প্রবণতা বর্তমান প্রবৃদ্ধির ধারাকে আরও শক্তিশালী করেছে। তবে, ২০২৪ সালে ২০২৩ সালের তুলনায় উন্নতি হলেও, ২০২২ সালের তুলনায় আয় এখনও কম।

বাংলাদেশের তুলনায়, ২০২৪ সালে চীন ২.৬১% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যেখানে পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া যথাক্রমে ১২.৪১% ও ২০.৭৩% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ইইউতে চীনের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৬.০৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে ছিল ২৫.৪০ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, তুরস্ক থেকে ইইউতে পোশাক আমদানি ৬.৬৪% কমে ১০.০৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ভিয়েতনাম ৪.২১% বৃদ্ধি পেয়ে ৪.৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া ২০২৪ সালে ইইউ পোশাক বাজার থেকে যথাক্রমে ৩.৭৯ বিলিয়ন ও ৪.২২ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। ২০২৪ সালে, ইইউ ভারত থেকে ৪.৫২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১.৯৭% বেশি।

ব্র্যান্ড বিজিএমইএর প্রাক্তন পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “বাংলাদেশ রপ্তানির পরিমাণ ও মূল্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছে। তাই, ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধির জন্য কৌশলগত পরিবর্তন জরুরি।” তিনি আরও বলেন, “বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির মুখে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা নিশ্চিত করতে এবং মুনাফার পরিমাণ ধরে রাখতে মূল্য সংযোজন ও বাজার বহুমুখীকরণ অপরিহার্য।”

সূএ: বাসস