বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি শিপিং সেবা চালু

রাইজিং কুমিল্লা অনলাইন

Rising Cumilla -Bangladesh-Pakistan direct shipping service launched
বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি শিপিং সেবা চালু/ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো সরাসরি সমুদ্রপথে শিপিং সেবা চালু হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনের সময় ২৩ দিন থেকে প্রায় অর্ধেকে নেমে মাত্র ১০ দিন হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে পরিবহন ব্যয়ও, যা দুই দেশের বাণিজ্যিক যোগাযোগে এক বাস্তব অগ্রগতি এনেছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সামা টিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জাতীয় পরিষদে জমা দেওয়া এক লিখিত প্রতিবেদনে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতায় বেশ কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা গেছে। করাচি-চট্টগ্রাম সরাসরি শিপিং সেবা চালু হওয়ার ফলে লজিস্টিক ব্যবস্থার দক্ষতা বহুলাংশে বেড়েছে এবং পরিবহন ব্যয়ও কমেছে।

বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পাকিস্তানি পণ্যের জন্য বন্দরগুলোতে ১০০ শতাংশ পরিদর্শন বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এই সিদ্ধান্তকে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘যুগান্তকারী অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এর ফলে দুই দেশের মধ্যে আস্থা বাড়বে এবং পণ্য পরিবহনের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে। কাস্টমসে বিলম্ব কমে যাওয়ায় পাকিস্তানি রপ্তানি এখন বাংলাদেশের বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে।

বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে ইসহাক দার জানান, ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর ঢাকায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এই আলোচনার ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে হওয়া এক চুক্তির ভিত্তিতে পাকিস্তান ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানি করেছে এবং মোট ২ লাখ টন চাল রপ্তানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেছেন, আগামী মাসগুলোতেও এই কাঠামোর অধীনে চাল রপ্তানি অব্যাহত থাকবে।

লিখিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ও ডেনিম এক্সপোতে পাকিস্তানের দুই শতাধিক কোম্পানি অংশ নিয়েছে, যা বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও উৎপাদন খাতে পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রতিফলন।

সামুদ্রিক যোগাযোগের পাশাপাশি দুই দেশ এখন সরাসরি আকাশপথ চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসহাক দার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পাকিস্তানের দুটি বেসরকারি বিমানসংস্থাকে ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। বর্তমানে উভয় পক্ষ সময়সূচি ও লজিস্টিক চূড়ান্ত করার কাজ করছে। তার প্রত্যাশা, এই ফ্লাইট চালু হলে ব্যবসা ও পর্যটন—উভয় ক্ষেত্রেই দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে।

আরও পড়ুন