শনিবার ১১ অক্টোবর, ২০২৫

বাংলাদেশের খাবার স্থান পেল ‘সেরা উদ্ভাবন’ তালিকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের খাবার স্থান পেল 'সেরা উদ্ভাবন' তালিকায়/ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন কর্তৃক নির্বাচিত ‘২০২৫ সালের সেরা উদ্ভাবনের’ তালিকায় স্থান করে নিয়ে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশে তৈরি এক যুগান্তকারী খাবার। এই সাশ্রয়ী সম্পূরক খাবারটির নাম এমডিসিএফ-২ (মাইক্রোবিওটা-ডাইরেক্টেড কমপ্লিমেন্টারি ফুড), যা অপুষ্টিতে ভোগা লাখো শিশুর জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে।

এই খাবারটি কেবল শিশুদের পেট ভরাতেই সাহায্য করে না, এটি অপুষ্টি মোকাবিলায় এক বৈপ্লবিক ভূমিকা রাখে। এমডিসিএফ-২ শিশুর ক্ষুদ্রান্ত্রে থাকা সব অণুজীবের সমষ্টি (মাইক্রোবায়োম) এবং সেগুলোর জিনগত উপাদানকে (গাট মাইক্রোবায়োম) ঠিক করার মাধ্যমে শিশুর স্বাস্থ্য উন্নতিতে সহায়তা করে।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণাকেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির যৌথ গবেষণার ফসল এই অনন্য খাবার। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ দেশীয় উপাদান দিয়ে। এমডিসিএফ-২-এর মূল উপাদানগুলো হলো—ছোলার গুঁড়া, সয়াবিনের গুঁড়া, চিনাবাদামের গুঁড়া ও কাঁচাকলা।

এই উপাদানগুলো এমনভাবে সুচিন্তিতভাবে বাছাই করা হয়েছে, যাতে তা শিশুর শরীরে থাকা নির্দিষ্ট উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি জোগায়। এর ফলে শিশুর শরীর প্রাকৃতিকভাবেই খাদ্য থেকে পুষ্টি গ্রহণে সক্ষম হয়, যা তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও মানসিক বিকাশ বাড়াতে সাহায্য করে।

আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক তাহমিদ আহমেদ এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্তিতে গভীর অনুপ্রেরণা প্রকাশ করে বলেন, “এটি প্রমাণ করে, বিজ্ঞান ও সহানুভূতির সমন্বয়ে কীভাবে বিশ্বের দীর্ঘদিনের স্বাস্থ্যসমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এমডিসিএফ-২ আমাদের নতুন আশা দেখায় যে স্থানীয়ভাবে তৈরি সাশ্রয়ী সমাধান দিয়েই লাখো অপুষ্ট শিশু শুধু বাঁচবেই না, বরং সুস্থভাবে বড়ও হবে।”

এই যুগান্তকারী উদ্ভাবনের সূত্রপাত হয়েছিল তাহমিদ আহমেদ ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী জেফরি গর্ডনের এক আলোচনার মাধ্যমে। বাংলাদেশে অপুষ্টি নিয়ে তাহমিদ আহমেদের বহু বছরের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, অন্যদিকে মানবদেহের গাট মাইক্রোবায়োম বিষয়ে জেফরি গর্ডনের রয়েছে পথ দেখানোর মতো গবেষণা। এই দুই প্রথিতযশা বিজ্ঞানীর অভিজ্ঞতা ও কাজ একত্র হয়েই নতুন এই সমাধান তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন