মঙ্গলবার ১৯ আগস্ট, ২০২৫

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে ফেলার আশা কুমিল্লার কৃষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

Rising Cumilla - Aush rice harvesting
পাকা আউশ ধান ঘরে তুলতে কৃষকেরা/ছবি: সংগৃহীত

গত বছর বিভিন্ন নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যায় সব ফসল হারানোর পর এ বছর ভালো ফলনে আনন্দে মেতে উঠেছেন কুমিল্লার বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, চৌদ্দগ্রাম- বরুড়া ও সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষকেরা। তাদের কঠোর পরিশ্রম ও যত্নে ফলানো আউশ ধান এখন ঘরে তোলার মোক্ষম সময় চলছে। বিভিন্ন উপজেলার এলাকায় মাঠে মাঠে এখন ফসল কাটার উৎসবের আমেজ।

কৃষকরা জানান, গত বছর তারা তাদের আধাপাকা ও পাকা আউশ ধান ঘরে তুলতে পারেননি। আকস্মিক বন্যায় চোখের সামনে কষ্টার্জিত ফসল তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য তারা এখনো ভুলতে পারেননি। তবে এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ফলন ভালো হওয়ায় তারা দারুণ খুশি। গত বছরের ক্ষতির কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে তারা মনে করছেন।

বুড়িচং উপজেলার স্থানীয় কৃষক কাওসার আহমেদ রাইজিং কুমিল্লাকে জানান, “গত বছর ঘরে তোলার অপেক্ষায় থাকা পাকা আউশ ধান বন্যায় সব ডুবিয়ে দিয়েছিল। তবে এবার আমরা পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছি। আমি আউশ ধান লাগাইচি। এর মধ্যে এক বিঘে জমির ধান বাড়িতি নিয়ে গিয়ে মাড়াই করিচি। আমার ২৪ মণ হারে ফলন হয়চে। এবার মনে করেন পানি খরচ, জন (শ্রমিক) খরচ একটু বেশি লাগেছে। তারপরও বাজারে ধানের দাম এখুন মোটামুটি ভালো। তাই আমাগের পুষায়ে যাচ্ছে। এর চাইতে যদি দাম কমে যায় তাহলে আমাদের লস হবে।”

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা বলেন, “এখন কৃষকদের ব্যস্ততা বেড়েছে। তাদের কঠোর পরিশ্রম ও স্বপ্নের বাস্তবায়নের সম্মিলিত চিত্র মাঠে মাঠে ফুটে উঠেছে।” তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা দেওয়াসহ ফসলের রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত সহযোগিতা করা হচ্ছে, যা ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। এই আনন্দ কৃষকদের নিরলস পরিশ্রমের ফল।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, “এবার আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ১০৪ হেক্টর, যা ছাড়িয়ে অর্জিত হয়েছে ৫ হাজার ১৪৬ হেক্টর। সময়মতো সঠিক বালাইনাশক, সার ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এবার ফলন আশানুরূপ হয়েছে।”

বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের কৃষক কামাল মিয়া রাইজিং কুমিল্লাকে জানান, “তিনি এবার আউশ ধানের আবাদ করেছেন। জমিতে সেচ, সার, ধান কাটা, বাড়িতে নিয়ে যাওয়া সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা।”

আরও পড়ুন