
বর্তমানের দূষণযুক্ত এবং ব্যস্ত জীবনযাত্রায় ফুসফুসের সমস্যা ক্রমশই বাড়ছে। অল্প বয়সেই শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD)-এর মতো রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে, এমনকি ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ছে। ধূমপান, ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস – এই সবকিছুর সম্মিলিত প্রভাবে ফুসফুসের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
তবে আশার কথা হলো, দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে কিছু সাধারণ খাবার যোগ করে সহজেই ফুসফুসকে পরিষ্কার ও সক্রিয় রাখা সম্ভব।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক এমন ৫টি প্রাকৃতিক উপাদান সম্পর্কে যা নিয়মিত খেলে ফুসফুস থাকবে সুস্থ ও সতেজ:
১. আদা: আদার শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী গুণ ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে এবং জমে থাকা শ্লেষ্মা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। এটি শ্বাসপ্রশ্বাসকে সহজ করে তোলে। প্রতিদিন সামান্য কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন, অথবা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে এর কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পায়।
২. লেবু: ভিটামিন সি-এর এক চমৎকার উৎস হলো লেবু, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করে। সকালে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে পান করা ফুসফুসের জন্য উপকারী। চাইলে এর সাথে মধুও যোগ করতে পারেন।
৩. তুলসী: আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে তুলসীকে ফুসফুসের জন্য ‘অমৃত’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এতে থাকা ‘ইউজেনল’ নামক উপাদান সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শ্বাসনালীকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। তুলসী পাতা সরাসরি চিবিয়ে খাওয়া যায়, কিংবা তুলসীর চা অথবা মধুর সঙ্গে তুলসীর রস মিশিয়ে পান করলেও সমানভাবে উপকার পাওয়া যায়।
৪. হলুদ: হলুদের মূল উপাদান ‘কারকিউমিন’ ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে কার্যকর। রাতে দুধে হলুদ মিশিয়ে পান করতে পারেন, অথবা হালকা গরম পানিতে হলুদ ও লেবুর রস মিশিয়ে একটি ডিটক্স পানীয় তৈরি করে পান করতে পারেন।
৫. রসুন: রসুনে বিদ্যমান ‘অ্যালিসিন’ একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। এটি জমে থাকা শ্লেষ্মা ভাঙতে, ফুসফুসকে পরিষ্কার রাখতে এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১-২ কোয়া কাঁচা রসুন খেলে উপকার মেলে। মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলেও এর কার্যকারিতা বাড়ে।
দামি ওষুধের ওপর নির্ভর না করে, দৈনন্দিন কিছু সাধারণ খাবারই হতে পারে আপনার ফুসফুসের সুরক্ষাকবচ। তবে মনে রাখা জরুরি, যদি কোনো সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে আপনাকে ভোগায়, তবে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
সূত্র : আজকাল