মে ১২, ২০২৫

সোমবার ১২ মে, ২০২৫

প্রতিটি দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে বুক কেঁপেছে: রাশমিকা

Rising Cumilla - Rashmika Mandanna
ছবি: সংগৃহীত

‘সামি সামি’ গানের ঝড় তোলার পর ‘পুষ্পা’র হাত ধরে বলিউডে পা রাখা দক্ষিণী অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা ফের একবার হিন্দি সিনেমার দর্শকদের মন জয় করতে প্রস্তুত। রণবীর কাপুরের সঙ্গে ‘অ্যানিম্যাল’-এ অভিনয়ের পর সমালোচিত হলেও, সলমানের বিপরীতে ‘সিকান্দার’-এর পর আবারও বলিউডের নতুন প্রজেক্ট নিয়ে হাজির তিনি। এবার তার সঙ্গী হচ্ছেন অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানা। এই জুটিকে দেখা যাবে দীনেশ বিজনের প্রযোজনায় তৈরি হরর-কমেডি ঘরানার ছবি ‘থামা’-তে।

হরর-কমেডি ছবি নির্মাণে সিদ্ধহস্ত দীনেশ বিজন এর আগে ‘স্ত্রী’, ‘ভেড়িয়া’ এবং সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মুঞ্জা’-র মতো সফল ছবি উপহার দিয়েছেন। শ্রদ্ধা কাপুর ও রাজকুমার রাও অভিনীত ‘স্ত্রী’-র অভাবনীয় সাফল্যের পর নির্মাতারা এবার ‘থামা’ নিয়ে আশাবাদী।

‘থামা’ নামটি উঠে এসেছে মহাভারতের অমর চরিত্র ‘অশ্বত্থামা’র কাছ থেকে। প্রেম, অভিশাপ এবং অমরত্বের এক অদ্ভুত মিশেল দেখা যাবে এই ছবিতে। ‘মুঞ্জা’ খ্যাত পরিচালক আদিত্য সারপোতদার এই ভ্যাম্পায়ার থিমের রোমান্টিক-কমেডিটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। উটির ঘন জঙ্গলে এর দৃশ্যধারণ করা হয়েছে, যেখানে কুয়াশার আবরণে ঢাকা প্রকৃতির মাঝে এক অসমাপ্ত ভালোবাসার নতুন গল্প ক্যামেরাবন্দী হয়েছে।

সিনেমার গল্পে দর্শক দেখবেন তরুণ গবেষক অর্জুন (আয়ুষ্মান খুরানা) বিজয়নগরের প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি খুঁজে পান কিছু রহস্যময় লিপি, ছেঁড়া দলিল এবং এক অভিশপ্ত প্রেমের কাহিনি। ঠিক তখনই তার জীবনে আগমন ঘটে অনন্যা (রাশমিকা মান্দানা)-র, একজন ভ্রমণপিপাসু ও ইতিহাসপ্রেমী প্রাণবন্ত মেয়ে। অনন্যার উপস্থিতি অর্জুনের গবেষণায় নতুন রং যোগ করে। কিন্তু তাদের সম্পর্কের সূত্রপাত হওয়ার আগেই, এক ভয়ানক অতীত ছায়ার মতো তাদের অনুসরণ করতে শুরু করে। সেই অতীতে ছিল বিজয়নগরের এক রাজকুমারী (আবারও রাশমিকা) এবং এক অভিশপ্ত যোদ্ধা অশ্বত্থামা (আয়ুষ্মান)।

হাজার বছরের অভিশাপ বয়ে বেড়ানো সেই প্রেম, যাকে মৃত্যুও স্পর্শ করতে পারেনি, যা আজও বিস্মৃত হয়নি, তারই অশরীরী প্রভাব বর্তমানের প্রেক্ষাপটকে আচ্ছন্ন করে রাখে। এখান থেকেই গল্পের বাঁক বদল হয়। এই পর্যায়ে গল্পে প্রবেশ করেন রহস্যময় অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। একসময় যিনি ছিলেন রাজদরবারের গোপন রক্ষক, এখন তিনি ভয়ের প্রতীকরূপে আবির্ভূত হন। তার আগমন সেই অশ্বত্থামার অতীতের পর্দা উন্মোচন করে, যেখানে প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা এবং রক্তের অন্ধকার একে অপরের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল।

সিনেমাটি নিয়ে উচ্ছ্বসিত রাশমিকা মান্দানা বলেন, “এই সিনেমায় আমি দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমি একইসঙ্গে আধুনিক যুগের অনন্যা এবং অতীতের রাজকুমারী। দুটি চরিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুর হলেও, একটি অদৃশ্য সূত্রে বাঁধা। প্রতিটি দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে বুক কেঁপেছে।”

আয়ুষ্মান খুরানার মতে, “এই ছবিতে আমি কেবল একজন প্রেমিক নই, বরং এক অভিশপ্ত আত্মা। সেই আত্মার অভিজ্ঞতা থেকে আমি উপলব্ধি করেছি, ভালোবাসা যদি খাঁটি হয়, তবে সময়ের স্রোতও তাকে মুছে ফেলতে পারে না। সিনেমার পরিচালক পুরাণ এবং আধুনিক সময়ের রোমান্সকে এমনভাবে একত্রিত করেছেন, যা দেখে দর্শক বাস্তব ও কল্পনার মাঝে দাঁড়িয়ে তাদের আত্মার কোনো হারানো ইতিহাস খুঁজে পাবে।”

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে খবর, নির্মাতারা দীপাবলির শুভক্ষণের জন্য অপেক্ষা করছেন। মনে করা হচ্ছে, এই বছরের দীপাবলির আলোয় যখন ‘থামা’ মুক্তি পাবে, তখন দর্শক অন্ধকার জঙ্গল এবং অতীতের ছায়ার মধ্যে এক নতুন আলোর সন্ধান পাবেন। হয়তো ভালোবাসা আবারও এক নতুন অর্থ লাভ করবে—থেমে না থেকে, অমরত্বের পথে যাত্রা করবে।

আরও পড়ুন