
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংটার্ন সিনাওয়াত্রাকে (৩৯) পদচ্যুত করেছে দেশটির সাংবিধানিক আদালত। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফাঁস হওয়া একটি ফোন কলকে কেন্দ্র করে দেশটির সাংবিধানিক আদালত তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করেছে।
২০২৪ সালের আগস্টে দায়িত্ব নিয়েছিলেন পেতোংতার্ন। তখন অনেকেই তাকে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি ও থাই রাজনীতিতে নতুন ধারা আনার প্রতীক হিসেবে দেখেছিলেন। কিন্তু এক বছরের মাথায়ই সেই স্বপ্ন ভেঙে গেল।
পেতোংতার্ন ছিলেন থাইল্যান্ডের প্রভাবশালী সিনাওয়াত্রা পরিবারের সদস্য—যাদের রাজনীতি বহুদিন ধরেই দেশটিতে আলোচিত-সমালোচিত। তবে তার পতনের সূত্রপাত ঘটে একটি ফোনকল ফাঁসের মাধ্যমে, যেখানে তিনি কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনকে ‘আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করেন এবং থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীকে দায়ী করে বলেন, তাদের কারণেই কম্বোডিয়ার এক সেনা সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।
এই মন্তব্যে দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। বিরোধী দলগুলো অভিযোগ তোলে—প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিচ্ছেন, এমনকি কম্বোডিয়ার সঙ্গে গোপন সমঝোতার পথ খুঁজছেন। সমালোচনা আরও জোরালো হয় যখন দেখা যায়, ফোনকলে তিনি হুন সেনকে আশ্বস্ত করে বলেন, “আপনি যদি কিছু চান, জানাবেন। আমি দেখে নেব।”
ফোনকলটি সামনে আসে এমন এক সময়, যখন দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। থাই সেনা ও কম্বোডিয়ান বাহিনীর মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণহানিও ঘটে, যা পরে শান্ত হয় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায়।
ফোনকলে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পেতোংতার্ন দাবি করেন, উত্তেজনা কমাতে তিনি কৌশলগতভাবে ওই ভাষায় কথা বলেছেন। এমনকি সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমাও চান। কিন্তু ক্ষোভ আর আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি।
ফলে গত ১ জুলাই আদালত তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন স্থগিত করে। তিনি তখন সংস্কৃতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। আর এখন, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হলো।
সূত্র: সিএনএন
 
								
 
								








