
ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বিভাগ পেঁয়াজ রপ্তানিতে আরোপিত ২০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এর ফলে, ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বিনা শুল্কে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারবেন।
তবে ভারতের এই ঘোষণায় বাংলাদেশের পেঁয়াজ চাষিদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ, বর্তমানে দেশে পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে দাম এমনিতেই কম। এর মধ্যে আমদানি বাড়লে কৃষকরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কৃষকদের দাবি, বাজারে পেঁয়াজের দাম বর্তমানে এতটাই কম যে, উৎপাদন খরচ তোলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায়, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হলে তাদের লোকসান আরও বাড়বে। ফরিদপুরের সালথা বাজারের পেঁয়াজ চাষি এনামুল বলেন, “পেঁয়াজের দাম একদম কম। আমাদের খরচ উঠছে না। এর মধ্যে ভারতের এ সিদ্ধান্তে বাজার আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে বহু কৃষক পথে বসে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “কৃষকদের স্বার্থে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা উচিত। এতে কৃষকরা কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে।”
তবে, আমদানিকারক ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দেশে পেঁয়াজের দাম কম থাকা এবং ভরা মৌসুম হওয়ার কারণে এখনই পেঁয়াজ আমদানির সম্ভাবনা কম। ঢাকার শ্যামবাজারের পেঁয়াজ আমদানিকারক আব্দুল মাজেদ বলেন, “এখন দেশে পেঁয়াজের দাম একদম কম। এতে শুল্ক কমলেও ভারত থেকে পেঁয়াজ এনে খুব বেশি লাভ হবে না। তবে এ পেঁয়াজের কিছু ক্রেতা রয়েছে। এ কারণে অল্প-স্বল্প আসবে।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী দুই মাসে প্রচুর পেঁয়াজ আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ, এখন দেশে প্রচুর পেঁয়াজ আছে, এতে বাজার কমে গেলে আমদানিকারকরাও লোকসানে পড়বেন।”
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ থাকলে দেশের বাজার স্থিতিশীল থাকে এবং কেউ চাইলেই সহজে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াতে পারে না।
এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।