বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই, ২০২৫

পাকিস্তানি অভিনেত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ফরেনসিক রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য!

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ নয় মাস আগে মারা যাওয়া পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমায়রা আসগর আলীর (৪২) রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে। ময়নাতদন্তের রাসায়নিক রিপোর্টে তার দেহে কোনো ধরনের বিষাক্ত উপাদান পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির পুলিশ। এতে মৃত্যুর কারণ নিয়ে আবারও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

গত ৮ জুলাই করাচির ইত্তেহাদ কমার্শিয়াল এলাকার ভাড়া বাসা থেকে হুমায়রা আলীর পচাগলা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আরব নিউজ এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, লাহোরে জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রী প্রায় সাত বছর ধরে করাচিতে একা বসবাস করছিলেন এবং তার অভিনয় জীবন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সম্প্রতি বাড়িভাড়া বকেয়া থাকায় আদালত নিযুক্ত একজন বেইলিফ তার ফ্ল্যাটে প্রবেশ করলে মরদেহটি উদ্ধার হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচইজে রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব কেমিস্ট্রির ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যানালিটিক্যাল সেন্টারে করা কেমিক্যাল রিপোর্টে জানা গেছে, হুমায়রা আলীর শরীরে কোনো ঘুমের ওষুধ, সাইকোটিক, মাদক বা বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ মাহরোজ আলি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তার চুল, ফুসফুস এবং লিভারের নমুনা পরীক্ষা করে এই ফরেনসিক বিশ্লেষণ চালানো হয় এবং এতে বিষক্রিয়ার কোনো প্রমাণ মেলেনি।

ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) সৈয়দ আসাদ রেজা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৪ সালের ৭ ও ৮ অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে হুমায়রার মৃত্যু হয়। দীর্ঘ সময় পর মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় তদন্ত জটিল হয়ে উঠেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। পুলিশ চারটি সম্ভাবনা নিয়ে তদন্ত করছে: প্রাকৃতিক মৃত্যু, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, আত্মহত্যা অথবা খুন। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রাকৃতিক বা দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর দিকেই ইঙ্গিত করছে ঘটনাটি।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘরের যে কক্ষে মরদেহটি পাওয়া যায়, সেটি একটি পেইন্টিং স্টুডিও ছিল এবং পাশের বাথরুমে যাতায়াতের পথ হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। সেখানে কাপড় ধোয়ার কাজে ব্যবহৃত একটি টবও পাওয়া গেছে। ডিআইজি রেজা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, হুমায়রা কাপড় ধোয়ার সময় হয়তো পিছলে পড়ে গিয়েছিলেন। তবে আশপাশে কোনো রক্তের দাগ ছিল না, শরীরে কোনো হাড় ভাঙার চিহ্নও পাওয়া যায়নি এবং শারীরিক নির্যাতনের কোনো আলামতও মেলেনি।

যদিও এসব তথ্যে খুনের প্রমাণ না মিললেও পুলিশ এখনই কোনো সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা মোবাইল ফোন, ট্যাবলেটসহ ডিজিটাল ডিভাইসগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন