দেশজুড়ে ফের বাড়ছে গরমের দাপট। শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের পাঁচটি জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। জেলাগুলো হলো রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও রাঙ্গামাটি। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া, রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। অর্থাৎ, গরমের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। তবে, স্বস্তির খবর হলো, সপ্তাহের শেষের দিকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, গত বছরের মতো এ বছরও দেশ তীব্র গরমের মুখোমুখি হতে পারে। গত বছর ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের উষ্ণতম বছর। এপ্রিলে তাপমাত্রা ছিল ৭৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত টানা ৩৫ দিন তাপপ্রবাহ চলেছিল।
এবারও আবহাওয়াবিদরা এপ্রিল ও মে মাসে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন। তবে, তাদের মতে, এবার মেঘ সৃষ্টির প্রবণতা কিছুটা বেশি থাকায় এবং কালবৈশাখীর সংখ্যা বাড়তে পারে। ফলে, গত বছরের মতো একটানা দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহ নাও থাকতে পারে। তবে, গরমের অনুভূতি আগের চেয়ে বেশি হতে পারে।
এই পূর্বাভাসের পেছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। এবার শীতকালে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ফেব্রুয়ারিতে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। এছাড়া, শীতে বৃষ্টিও হয়েছে প্রায় ৭৭ শতাংশ কম।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মার্চে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। এ মাসের শেষ দিকে পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে এক থেকে দুটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এপ্রিলজুড়েও তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, "তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। শীতের মাসগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা ইঙ্গিত দিচ্ছে, গরম এবার অনেকটাই বেশি পড়বে।"
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এরই মধ্যে নানা ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত বছর এপ্রিলে তীব্র গরমে অনেক রেকর্ড ভেঙেছিল। এক মাসের প্রবল গরমে জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। কৃষিতে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, পানির স্তর নেমে গিয়েছিল, রেলপথ বেঁকে গিয়েছিল এবং রাস্তাঘাটের অবস্থাও খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া, জনস্বাস্থ্যও দীর্ঘমেয়াদি হুমকির মুখে পড়েছিল।
উল্লেখ্য, ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলে মৃদু, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মাঝারি, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তীব্র এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর বেশি তাপমাত্রা হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC