পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ছোটবেলা থেকে পাঠ্যবইয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব সম্পর্কে পড়ে এসেছি। কিন্তু এর মূল বিষয় হলো বাস্তব জীবনে কতটুকু প্রয়োগ করতে পেরেছি সে বিষয়টি।
ব্যক্তিজীবন, সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় জীবনেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রজীবন থেকেই এ অভ্যাসটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করি। পড়ালেখার সুবাধে আমাদের অনেকেই বাসা থেকে দূরে থাকতে হয়। কেউ কেউ ছাত্রাবাসে থাকছেন আবার কেউ মেসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
এক্ষেত্রে দেখা যায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিজেদের থাকার জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন না। যার ফলে এর প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী নিজেদের চারপাশ সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন, তারা অন্যের তুলনায় মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য বেশি ভালো থাকেন। রাষ্ট্র, সমাজ কিংবা ব্যাক্তি সব জায়গাতেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকে গুরুত্বের সহিত দেখা উচিত।
ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তি পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি প্রশাসনকেও তাদের জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করা উচিত। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ হলগুলোতেই শিক্ষার্থীদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি প্রশাসনকে অবহেলা করতে দেখা যায়।
ফলে অধিকাংশ হলের রান্নাঘর, ডাইনিং, ওয়াশরুম থাকে অপরিচ্ছন্ন। শিক্ষার্থীদের আবাসস্থল যেহেতু তাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলে তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি নিশ্চিত করা উচিত।
একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের বেশকিছু দায়িত্ব রয়েছে এক্ষেত্রে নিজের ঘর পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি ঘরের বাহিরেও যেসব জায়গায় আমাদের নিত্যদিন চলাচল করতে হয়। সেসব জায়গা পরিষ্কার রাখার বিষয়েও সচেতন হওয়া জরুরি। আমাদের ক্যাম্পাস এরিয়া আমরা পরিষ্কার করতে না পারলেও নানা ধরনের অপ্রয়োজনীয় জিনিস ফেলে ময়লা করা উচিত নয়।
প্রত্যেক ধর্মেই আমাদের চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। ইসলাম ধর্মেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ২২২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ভালোবাসেন তাওবাকারীদের এবং উত্তমরূপে পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের’।
আমাদের আবাসস্থলসহ চারপাশ পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখলে সহজেই অনেক ধরনের মানসিক অবসন্নতা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে আমাদের শরীর-মন থাকে প্রফুল্লচিত্ত।
তাই ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয় জীবনে সুস্থ, সবল, সতেজ প্রফুল্লচিত্ত থাকতে হলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন।