নভেম্বর ১৭, ২০২৪

রবিবার ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে ওসি-ইউএনও বদলির নির্দেশ ইসির

Bangladesh Election Commission (EC)
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। গ্রাফিক্স: রাইজিং কুমিল্লা

নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলি করার নির্দেশ দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বর্তমান কর্মস্থলে এক বছরের বেশি চাকরি সম্পন্ন হয়েছে তাদের অন্য জেলায় বদলির প্রস্তাব আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ইসিতে পাঠাতে বলা হয়েছে। চিঠির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে।

একই দিনে সব থানার ওসিদের পর্যায়ক্রমে বদলির নির্দেশ দিয়ে ইসি সচিবালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের নিমিত্তে সব থানার ওসিদের পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ওসিদের বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের বেশি চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে তাদের অন্য জেলায় বা অন্যত্র বদলির প্রস্তাব আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ইসিতে পাঠাতে বলা হয়েছে।

ওই চিঠির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককেও পাঠানো হয়।

গতকাল শুক্রবার ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। একই দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয় পুলিশ সদর দপ্তরে। আজ শনিবার থেকে ওসি বদলির কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এতদিন ধরে পুলিশ ও প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ে বড় রদবদল না আনার কথা বলা হয়েছিল। গত ২২ নভেম্বর এ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। এ সময় তিনি বলেন, ‘‌মাঠ প্রশাসনে রদবদল করতে গিয়ে বিশৃঙ্খলা হলে তার দায় কে নেবে?’ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালও গত রোববার এক প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, প্রশাসনে রদবদল কে কখন করেছিল? তবে এর চারদিনের মাথায় প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ে বড় রদবদলের পথে হাঁটল নির্বাচন কমিশন। সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ৩০ নভেম্বর। ১-৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানির সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬-১৫ ডিসেম্বর। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর।

বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশের ৩০০ আসনে মোট ২ হাজার ৭১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩২ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ১ হাজার ৯৬৬ জন। বাকি ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ গতকাল সাংবাদিকদের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার মোট প্রার্থীর এক-চতুর্থাংশই স্বতন্ত্র। আর প্রতি আসনে গড়ে প্রার্থী হয়েছেন ৯ জন।