
রাইজিং স্পোর্টস
নারী কাবাডি বিশ্বকাপ জিতেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছেন সাঞ্জু দেবী। দলীয় ও ব্যক্তিগত অর্জনের পূর্ণতায় ভেসে তিনি বলেন, “এই ম্যাচটার জন্য ১৩ বছর অপেক্ষা করেছি।” সত্যিই, নারী কাবাডি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর মাঠে গড়াতে ১৩ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ঢাকায় শেষ হয়েছে সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষার সমাপ্তি।
ভারত যখন দুইবার তারিখ ঘোষণা করেও টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারেনি, বাংলাদেশ সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে এবং প্রথমবারেই সাফল্যের সঙ্গে আয়োজন সম্পন্ন করেছে।
চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজন, যেখানে পুরুষ কিংবা নারী কোনো বিভাগেই এত বড় আসরের স্বাগতিক হয়নি বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন শুধু সাহস দেখায়নি, সুপরিকল্পিত আয়োজনের মাধ্যমে এক উদাহরণও তৈরি করেছে।
সোমবার ফাইনালের প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মাহবুব-উল-আলম বলেন, “এ ধরনের বড় আয়োজনে ভেন্যু ব্যবস্থাপনা, খেলোয়াড়দের থাকা-খাওয়া, যাতায়াত ও নিরাপত্তা—সব কিছুতেই কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। কাবাডি ফেডারেশন এটি সুচারুভাবে সম্পন্ন করেছে এবং বার্তা দিয়েছে যে বাংলাদেশ ভবিষ্যতেও এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারবে।”
কাবাডি ফেডারেশন সরকারি সহযোগিতা পেয়েছে শুরু থেকেই। বড় অঙ্কের আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি, ১০টি দেশের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের বাংলাদেশে আসার বিষয়টি নির্বিঘ্ন করা হয়েছিল। হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয়েছিল ঢাকা রিজেন্সি হোটেল, যা খেলোয়াড়রা প্রশংসা করেছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বও বাংলাদেশের পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলমের তত্ত্বাবধানে সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১১টি দেশের অধিনায়ককে নিয়ে বিশ্বকাপের ট্রফি উন্মোচনের মাধ্যমে আসরের সূচনা করেন। আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশকে গৌরবান্বিত করেছে এই আয়োজন। ১৫ নভেম্বর থেকে টানা ১০ দিন মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে কাবাডি উৎসব চলেছে। প্রায় প্রতিটি ম্যাচে গ্যালারি ভর্তি দর্শক দলগুলোর সমর্থনে উজ্জীবিত হয়েছেন।
বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত, ইরান, চাইনিজ তাইপে তাদের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ করেছে। সরাসরি সম্প্রচারে ছিল টি-স্পোর্টস, যা দেশের নারী কাবাডির জনপ্রিয়তাও বাড়িয়েছে বহুগুণ।
বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ বলেন, “বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করেছি। আমাদের নারী দল দারুণ খেলা উপহার দিয়ে পদক জিতেছে। এই অর্জনে সকলের অবদান আছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, কাবাডি ফেডারেশন এবং আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশনের সহযোগিতায় এটি সম্ভব হয়েছে।”
এই টুর্নামেন্টে তিনটি মহাদেশের প্রতিনিধিত্ব ছিল—এশিয়া থেকে বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, ইরান, নেপাল ও চাইনিজ তাইপে; ইউরোপ থেকে জার্মানি ও পোল্যান্ড; এবং আফ্রিকা থেকে কেনিয়া, উগান্ডা ও জাঞ্জিবার। দুইটি গ্রুপে লিগ পদ্ধতিতে খেলা শেষে সেমিফাইনালে গ্রুপের সেরা ও রানার্স আপ দল লড়াই করে। উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালের মাধ্যমে আনন্দমুখর সমাপ্তি ঘটে। শেষ দিনেও প্রতিটি দল নেচে-গেয়ে, উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বাংলাদেশের প্রতি বিদায় জানান।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC