দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২.৩ বছর, যা গত বছরের (২০২২) একই ছিল। শিক্ষা, কাজে বা প্রশিক্ষণে নেই, দেশে এমন তরুণের সংখ্যা ৩৯ শতাংশ। এছাড়া রাজধানীর বস্তিতে বসবাসকারী প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশ মানুষ বরিশালের বলে জানিয়েছে বিবিএস।
আজ রোববার (২৪ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁও পরিসংখ্যান ভবনে প্রকাশিত বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস- ২০২৩ জরিপ প্রতিবেদন এ তথ্য তুলে ধরেছে বিবিএস।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষা, কাজে বা প্রশিক্ষণে নেই, দেশে এমন তরুণের সংখ্যা ৩৯ শতাংশ। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৪০.৬৭ শতাংশ। এ বছর কিছুটা কমে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯.৮৮ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে ১৭ লাখ বেড়ে দেশের মোট জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ১৫ লাখ। মোট জনসংখ্যার মধ্যে নারী ৮ কোটি ৭৩ লাখ এবং পুরুষ ৮ কোটি ৪২ লাখ। অর্থাৎ দেশের পুরুষের চেয়ে ৩১ লাখ বেশি নারী।
সংস্থাটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে সর্বশেষ চূড়ান্ত জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। ফলে দেশে নতুন করে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৯ জন।
দেশে অলস সময় পার করছেন ৩৯ শতাংশ তরুণ এর আগে ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯৮ লাখ। সেই হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ১৫ লাখ। তবে ২০১১ সালের আদম শুমারি ভিত্তিতে দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৩৫ লাখ।
এদিকে রাজধানীর বস্তিতে বসবাসকারী প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশ মানুষ বরিশালের।
এর আগে ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে বরিশালে নিরাপদ টয়লেট সবচেয়ে কম বলে প্রকাশ করা হয়। সে সময় প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে ৫৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ পরিবারে নিরাপদ টয়লেট বা শৌচাগার সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে কম ৩৭ দশমিক ৯২ শতাংশ রয়েছে বরিশাল বিভাগে। আর সবচেয়ে বেশি নিরাপদ শৌচাগার সুবিধা ঢাকাতে। বিভাগটিতে এ হার ৬৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
বয়সভিত্তিক জনসংখ্যার বিন্যাস মধ্যে: ০-৪ বছর বয়সী ১০.২২ শতাংশ, ৫-১৪ বছর বয়সী ১৮.৫৬ শতাংশ, ১৫-২৪ বছর বয়সী ১৮.৬৭ শতাংশ, ২৫-৩৯ বছর বয়সী ২২.২৮ শতাংশ, ৪০-৪৯ বছর বয়সী ১১.৮৭ শতাংশ, ৫০-৫৯ বছর বয়সী ৮.৯৩ শতাংশ, ৬০-৬৪ বছর বয়সী ৩.৩৩ শতাংশ এবং ৬৫+ বছর বয়সী ৬.১৪ শতাংশ।
২০২৩ সালে জন্মের সময় প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল পরিসংখ্যানিকভাবে অপরিবর্তিত রয়েছে, যা ৭২.৩ বছর। জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার (RNI) ১.৩৩ শতাংশ যা ২০২২ সালে ছিল ১.৪০ শতাংশ। লিঙ্গ অনুপাত কিছুটা নিম্নমুখী যা ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েছে ৯৬.৩ শতাংশ এবং নির্ভরশীলতার অনুপাত ৫৩.৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১,১৭১ জন। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল জন্মহার ১৯.৪, যা ২০২২ সালে ছিল ১৯.৮। স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের হার ২০২২ সালের ৫৮.৬ শতাংশ সেই তুলনায় হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৪৯.৩ শতাংশ এবং অস্ত্রোপচার পদ্ধতিতে প্রসবের হার ২০২২ সালের (৪১.৪%) তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৫০.৭ শতাংশ। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল মৃত্যুহার ৬.১ শতাংশ যা ২০২২ সালে ছিল ৫.৮শতাংশ।
পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৩ এবং প্রতি লাখ জীবিত জন্ম শিশুর বিপরীতে মাতৃমৃত্যুর অনুপাত ১৩৬ জন, যা ২০২২ সালে ছিল ১৫৩ জন। মৃত্যুর শীর্ষ দশ কারণের ১ম কারণ-হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর হার ১.০২% এবং ২য় কারণ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর হার ০.৬৪%।
পুরুষদের প্রথম বিবাহের গড় বয়স ২৪.২ বছর এবং নারীদের ১৮.৪ বছর। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পল্লিতে আগমনের হার ২০.৪ এবং শহরে আগমনের হার ৪৩.৪।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অভিগমন প্রতি হাজারে ৬.৬১ জন থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮.৭৮ জন। আন্তর্জাতিক আগমন/বহিরাগমন প্রতি হাজারে ২৯৭ থেকে হ্রাস পেয়ে হয়েছে ২.৩৭ জন।
২০২৩ সালে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০২২ সালের (৬৩.৩%) তুলনায় কিছুটা হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৬২.১ শতাংশ। জন্মনিয়ন্ত্রণের অপূর্ণ চাহিদা ২০২২ সালের (১৬.৬২%) তুলনায় হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে ১৫.৫৭ শতাংশ হয়েছে। খানার আকার ২০২২ সালের ন্যায় ২০২৩ সালেও অপরিবর্তিত রয়েছে যা ৪.২ জন। তবে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে নারী খানাপ্রধানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে এটি ছিল ১৭.৪%, যা ২০১৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮.৯%।
অপরদিকে, পুরুষ খানাপ্রধান ২০২২ সালে ছিল ৮২.৬%, ২০২৩-এ হার হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৮১.১ শতাংশ। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭.৫৩ শতাংশে। সাত বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার ২০২৩ সালে হয়েছে ৭৭.৯ শতাংশ এবং ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে এ হার ২০২২ সালের (৭৪.৪) তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৫.৬ শতাংশ।