জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০৭৫ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ৯৫০ কোটিতে পৌঁছাবে। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি অপরিহার্য। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বে উৎপাদিত খাদ্যের ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ অপচয় হচ্ছে, যা প্রায় ২০০ কোটি টনের সমান।
উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ উভয়েই খাদ্য অপচয়ের জন্য দায়ী। উন্নত দেশগুলোতে অপচয়ের মূল কারণ হলো অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ এবং খাদ্যের অপব্যবহার। অন্যদিকে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রাচীন পদ্ধতিতে ফসল সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের ফলে খাদ্য অপচয় ঘটে।
গতকাল বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৩৭তম এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলনে খাদ্য ও পানি সংরক্ষণ এবং খাদ্য অপচয় রোধ শীর্ষক সেশনে এসব তথ্য ওঠে আসে। সেমিনারে বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারে বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেন, বাংলাদেশে ফসল সংগ্রহের পর বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ৩০ শতাংশ ফসল ও খাদ্য নষ্ট এবং অপচয় হয়। খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অপচয়ের পরিমাণ কমাতে পারলে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, কৃষিতে সরকারের অগ্রাধিকার হলো ফসলের সংগ্রহ-উত্তর নষ্ট ও অপচয়ের বিশাল পরিমাণ কমিয়ে আনা। সেই লক্ষ্যে সরকার ৫০-৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষকদের কৃষিযন্ত্র দিয়ে যাচ্ছে এবং বহুমুখী হিমাগার নির্মাণ, বহু ফসলের সমন্বিত সংরক্ষণাগার নির্মাণ ও শাকসবজি পরিবহনে রেফ্রিজারেটেড ভেহিকল দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। খাদ্য নষ্ট ও অপচয়ের পরিমাণ কমাতে ফসল তোলা, মাড়াই, পরিবহন ও সংরক্ষণে বিশাল বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে জানান মন্ত্রী।
কৃষিখাতে বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিতে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। তারপরও এসব খাতে বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। আমরা এখন সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) অগ্রাধিকার দিচ্ছি। অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মাহমুদুর রহমান এবং এফএওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি জিয়াওকুন শি উপস্থিত ছিলেন।