মঙ্গলবার ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

দেশজুড়ে প্রথম টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরু, কুমিল্লায় রেজিস্ট্রেশনে অভূতপূর্ব সাড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

First typhoid vaccination program launched nationwide, registrations in Comilla see unprecedented response
কুমিল্লায় টাইফয়েড টিকাদান রেজিস্ট্রেশনে অভূতপূর্ব সাড়া

সারাদেশে প্রথমবারের মতো একযোগে শুরু হয়েছে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি। এরই অংশ হিসেবে কুমিল্লাতেও আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো মাসব্যাপী এই কার্যক্রম। এই টিকাদান ক্যাম্পেইনের আওতায় কুমিল্লা জেলায় মোট ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৯ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) কুমিল্লার আলেকজান মেমোরিয়েল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টিকাদান কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

উল্লেখ্য, কুমিল্লায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় ১৩ লক্ষেরও অধিক শিশু এই ক্যাম্পেইনে রেজিস্ট্রেশন করেছে, যা জেলার জন্য একটি আশাব্যঞ্জক বার্তা।

ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর বশির। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রেজা মোহাম্মদ সারোয়ার আকবর, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. এ কে এম আব্দুস সেলিম, জেলা সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা নুরুল হক, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার শর্মা, আনসার-ভিডিপির জেলা কমান্ডেন্ট তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের প্রতিনিধি সাঈদা আলম এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পীযূষ কান্তি সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর বশির টাইফয়েডজনিত মৃত্যুহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে ১ লাখ ১০ হাজারের মধ্যে ১০ হাজার শুধু বাংলাদেশে মারা গেছে। এটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়।” সরকারের এই ফ্রি টিকাদান ক্যাম্পেইনে কুমিল্লায় রেজিস্ট্রেশনে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়ায় তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি রেজিস্ট্রেশন করা সবাইকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকা নিতে অনুরোধ জানান এবং টিকা নিয়ে কোনো অপপ্রচারে কান না দিতে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে অতিথি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম বলেন, “দেশজুড়ে সর্বোচ্চ রেজিস্ট্রেশন কুমিল্লায় হয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে একটি আশাব্যঞ্জক বার্তা।” তিনি টিকা নিয়ে যেকোনো গুজব ও অপতথ্য প্রতিরোধে গণমাধ্যমের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, সফলভাবে টিকাদান কর্মসূচি সম্পন্ন হবে।

মাসব্যাপী এই কার্যক্রমে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিনামূল্যে এক ডোজ ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, জন্মসনদ না থাকা শিশুরাও এই টিকার আওতায় আসবে, যাতে কেউ বাদ না পড়ে। এছাড়াও, কেউ রেজিস্ট্রেশন থেকে বাদ গেলেও, টিকা কেন্দ্রে এসে টিকা দিতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।

এটি দেশের প্রথম জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি। এই টিকাটি তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। সরকার আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন সহায়তা সংস্থা গ্যাভির সহায়তায় এই টিকা সংগ্রহ করেছে।

আরও পড়ুন