বুধবার ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

দুই নীলগাই শাবক জন্ম নিলো গাজীপুর সাফারি পার্কে

রাইজিং কুমিল্লা অনলাইন

Rising Cumilla -Two nilgai cubs born at Gazipur Safari Park
দুই নীলগাই শাবক জন্ম নিলো গাজীপুর সাফারি পার্কে/ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণীর দলে যুক্ত হয়েছে নতুন দুই সদস্য। পার্কের কোর সাফারি এলাকায় নীলগাইয়ের পালে সম্প্রতি এই দুটি নতুন শাবকের জন্ম হয়েছে। দিনভর শাবক দুটি মায়ের নিবিড় তত্ত্বাবধানে বনের ভেতর ঘুরে বেড়াচ্ছে।

গত পাঁচ-ছয় দিন ধরে গাজীপুর সাফারি পার্কের কোর সাফারি অঞ্চলে বনের ভেতরে তাদের দেখা মিলছে। তবে মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই মা নীলগাই সতর্কতা অবলম্বন করে শাবকদের নিয়ে দৌড়ে বনের অন্য প্রান্তে চলে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকায় অবস্থিত গাজীপুর সাফারি পার্কের কোর সাফারিতে তাদের দেখা মেলে।

পার্ক কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে তারা সর্বপ্রথম ২১ অক্টোবর শাবক দুটি দেখতে পায়। এরপর থেকে প্রতিদিন খাবার খেতে এলে নির্দিষ্ট স্থানে তাদের দেখা মিলছে। তবে নিরাপত্তার কারণে এবং কাছাকাছি না যাওয়ার সিদ্ধান্তে শাবক দুটি স্ত্রী না পুরুষ, তা এখনো জানা যায়নি। কর্তৃপক্ষ কাছাকাছি গিয়ে লিঙ্গ নির্ধারণের কোনো চেষ্টাও করেনি।

পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মো. রাজু আহমেদ জানান, এর আগেও বেশ কয়েকবার সেখানে নীলগাই শাবকের জন্ম হয়েছে। সর্বশেষ জন্ম নেওয়া দুটি শাবকসহ বর্তমানে পার্কে নীলগাইয়ের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১টি। এর মধ্যে নয়টি পূর্ণবয়স্ক নীলগাই—ছয়টি পুরুষ ও তিনটি স্ত্রী। বর্তমানে মা নীলগাই শাবক দুটিকে নিয়ে একটি নিরাপদ স্থানে রয়েছে।

পার্কের বন্যপ্রাণী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, নীলগাই প্রজাতিটি সাধারণত তাদের শাবকের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকে। শাবকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তারা অনেক সময় খাবার না খেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তাদের পাহারা দেয়। এই কারণে এদের শাবক দেখার সুযোগ কম মেলে। পার্কে সম্প্রতি জন্ম নেওয়া শাবকগুলো কিছুটা পরিণত হওয়ায় মায়েরা তাদের নিয়ে বাইরে আসা শুরু করেছে।

সাধারণত নীলগাই একসঙ্গে একটি থেকে তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। জন্মের পর বাচ্চাগুলো প্রায় ছয় মাস ধরে মায়ের দুধ পান করে। এরপর তারা মায়ের সঙ্গে অন্যান্য খাবার খাওয়ায় অভ্যস্ত হতে থাকে। নীলগাই হলো অ্যান্টিলোপ প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাণী। পুরুষ নীলগাইয়ের শিং থাকে এবং এদের গায়ের রং কিছুটা কালচে হয়। একই প্রজাতির স্ত্রীদের ক্ষেত্রে শিং থাকে না এবং তাদের গায়ের রং হয় কিছুটা বাদামি। এরা সাধারণত দুই বছরে প্রাপ্তবয়স্ক হয়, তবে পুরুষ নীলগাই প্রাপ্তবয়স্ক হতে সময় নেয় পাঁচ বছর।

গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তারেক রহমান জানান, গাজীপুর সাফারি পার্কে নীলগাই নতুন শাবকের জন্ম দিয়েছে। এছাড়াও পার্কের উন্মুক্ত এবং উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ায় নীলগাইয়ের দল অনেকটাই স্বস্তিতে আছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এই অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকলে পার্কটিতে নীলগাইয়ের বংশবিস্তার আরও বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন