এই অজ্ঞতার কারণেই অনেকে মাত্রাতিরিক্ত চা পান করে গ্যাস, অ্যাসিডিটির মতো নানা জটিল সমস্যার ফাঁদে পড়েন। তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে হলে দিনে কত কাপ চা পান করা উচিত, সে বিষয়ে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ জেনে নেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
অতি প্রিয় এই চায়ে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ক্যাটেচিনস এবং পলিফেনলসের মতো উপাদানগুলির ভাণ্ডার। শুধু তাই নয়, এতে অল্প পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিঙ্ক, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম-এর মতো খনিজও উপস্থিত। তাই নিয়মিত চা পান করলে যে শরীর ও স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়, তা বলাই বাহুল্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চায়ে থাকা বিভিন্ন উপাদানের গুণে একাধিক রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে:
- নিয়মিত চা পান করলে কোলেস্টেরলকে বশে রাখা যায়।
- সুগার বিপৎসীমা ছাড়াতে পারে না।
- এমনকি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
- এছাড়াও, এতে মজুত কিছু উপাদানের প্রভাবে উৎকণ্ঠা কমে এবং অবসাদ দূর হয়।
অর্থাৎ, শরীর ও মনকে সতেজ রাখতে নিয়মিত এই পানীয়তে চুমুক দেওয়াই যায়।
দিনে কত কাপ লিকার চা খাওয়া উচিত?
এই প্রশ্নের উত্তরে পুষ্টিবিদরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, একজন সুস্থ ব্যক্তি সারা দিনে মোটামুটি ৩ থেকে ৪ কাপ লিকার চা খেতে পারেন। এই পরিমাণ মেনে চললে শরীর সুস্থ ও সবল থাকবে।
তবে ভুলেও এর থেকে বেশি পরিমাণে চা পান করা উচিত নয়। অতিরিক্ত চা পান করলে পেটের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে, যার ফলস্বরূপ গ্যাস ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা পিছু নেবে। এছাড়া, নিয়মিত অত্যধিক পরিমাণে চা পান করলে শরীর গরম হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। তাই কাপের পর কাপ চা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
দুধ চা কি ক্ষতিকর? চিনির বিকল্প কী?
- আমাদের মধ্যে অনেকেরই লিকার চা পছন্দ নয়। তারা শত নিষেধ সত্ত্বেও দুধ চা পান করেন, যার ফলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং চায়ের স্বাস্থ্যকর উপকারিতাও নষ্ট হয়ে যায়। তাই চেষ্টা করুন দুধ চা থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে।
- যদি একান্তই দুধ চা পান করতে হয়, তাহলে ফ্যাট লেস দুধ ব্যবহার করুন এবং এই চা দিনে মাত্র ২ বার পান করুন। এই নিয়ম মেনে চললে সুস্থ থাকা সম্ভব।
- অনেকেই চায়ে অতিরিক্ত চিনি মিশিয়ে পান করেন, যা ওজন বৃদ্ধি করে। একবার ওজন বাড়লে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হাই প্রেশারের মতো জটিল অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই চায়ে চিনি মিশিয়ে না খাওয়াই শ্রেয়।
- চিনির পরিবর্তে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো পানীয়তে সামান্য মধু মেশাতে পারেন। তবে সব থেকে স্বাস্থ্যকর হলো চিনি বা মধু ছাড়া চা পান করা।
কফি পান নিয়ে পুষ্টিবিদদের মত
পুষ্টিবিদরা গ্রীষ্ম প্রধান দেশে নিয়মিত কফি পান করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তাদের মতে, কফি পান করলে শরীর গরম হওয়ার এবং রক্তচাপ (ব্লাড প্রেশার) বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই কফি থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই ভালো। যদি একান্তই পান করতে হয়, তবে দিনে এক কাপ দুধ ছাড়া কফি পান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

