
দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সংহতি এবং বাণিজ্যিক সংযোগ বাড়াতে এবার সার্কের বিকল্প নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে চীন ও পাকিস্তান। এই উদ্যোগে বাংলাদেশকেও যুক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে সোমবার (৩০ জুন) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন ও পাকিস্তান মনে করছে, দক্ষিণ এশীয় সহযোগিতাকে আরও কার্যকর করতে বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি নতুন আঞ্চলিক জোট অত্যন্ত জরুরি।
এই প্রেক্ষাপটেই গত ১৯ জুন চীনের কুনমিং শহরে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে তিন দেশের উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিকরা অংশ নেন। এটি ছিল এই তিন দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো এমন একটি শীর্ষ বৈঠক, যা ভারতের নজরে এসেছে এবং কিছুটা উদ্বেগেরও সৃষ্টি করেছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, এই নতুন জোট যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে সার্কের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। এক দশকের বেশি সময় ধরে সার্ক মূলত ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে অচল হয়ে আছে। ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও ভারত তাতে অংশ নেয়নি, এবং বাংলাদেশসহ আরও কয়েকটি দেশ ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছিল।
অন্যদিকে, ভারতের সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক কৌশলে আঞ্চলিক ফোরামগুলোর প্রতি আগ্রহ কমছে বলেও মনে করা হচ্ছে। দেশটি সম্প্রতি সার্কভুক্ত দেশগুলোর জন্য ব্যবসায়িক ভিসা সুবিধাও সীমিত করেছে।
জানা গেছে, চীন ও পাকিস্তান গত কয়েক মাস ধরেই একটি কার্যকর বিকল্প জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। কুনমিং বৈঠকে প্রাথমিকভাবে একটি নতুন ফোরাম গঠনের প্রস্তাব ওঠে, যেখানে ভবিষ্যতে অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তানের মতো দেশগুলোও যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ভারতের অংশগ্রহণ এখনো অনিশ্চিত।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের পশ্চিমমুখী কৌশল এবং সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও)-তেও তাদের নিরুৎসাহী অবস্থান চীনের নেতৃত্বাধীন এই উদ্যোগে ভারতের অংশগ্রহণে বাধা হতে পারে।