আজ বুধবার (২০ মার্চ) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের আট বছর পূর্ণ হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের এখনও চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। এ অবস্থায় বিচার পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন তনুর বাবা-মা।
দীর্ঘ এই সময়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা চিহ্নিত না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে তনুর পরিবারে। তবে পিবিআই বলছে, ‘তদন্তে অগ্রগতি আছে। সবকিছু কালেক্ট করা হয়েছে।’
তনুর মা আনোয়ারা বেগম ৮ বছরেও মেয়ে হত্যার বিচার না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি আর বিচার চাই না। বিচার চেয়ে কী লাভ? গরিবের ওপর জুলুমের বিচার হয় না। এ বছর তনুর বাবার চাকরির মেয়াদ শেষ হবে। এরপর আমরা এখান থেকে চলে যাব। মেয়ে হত্যার বিচার না পেয়েই এক বুক দুঃখ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে।
তিনি বলেন, পিবিআই ঢাকায় বসে বসে বক্তৃতা দেয়। আমাদের ডেকে পাঠিয়ে উল্টো হয়রানি করে। আমরা গরিব তাই বলে কারও গোলাম না যে যার কারণে মেয়ে হত্যার বিচার পাবো না। তনুকে অনেক কষ্ট করে লালন-পালন করেছি। কী বেদনা নিয়ে বেঁচে আছি, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। কলিজার টুকরাটা কবরে। তাকে ছাড়া কীভাবে ঈদ করবো? এ হত্যাকাণ্ডের বিচার যদি দুনিয়ায় না হয়, আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রাখলাম। আল্লাহর বিচার বড় বিচার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলাটির তদন্তে গত বছর একাধিকবার ঘটনাস্থল দেখা হয়েছে। তনুর পরিবার ছাড়াও অনেকের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মামলার তদন্তে বেশ কিছু অগ্রগতি আছে। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সবকিছু কালেক্ট করা হয়েছে।’
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ৮ বছর পূর্তিতে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে গ্রামের বাড়ি মুরাদনগরের দুই মসজিদে দোয়ার আয়োজন করেছে পরিবার। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজেও তার সহপাঠীরা আয়োজন করেছে দোয়া ও স্মরণসভার।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার হয়। পরদিন তাঁর বাবা ইয়ার হোসেন কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথম দফায় ময়নাতদন্তে তনুর মৃত্যুর কারণ বের না হওয়ায় কবর থেকে মরদেহ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত হয়। তাতেও মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা যায়নি। এ নিয়ে হয় আলোচনা-সমালোচনা।