
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে শীতের প্রভাব ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে হিমেল হাওয়া জোরে বইছে। সকালবেলায় কনকনে ঠান্ডা আর দুপুরে ম্লান রোদের কারণে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বাড়ছে ভোগান্তি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। একই সঙ্গে দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ শুরুর সম্ভাবনার কথাও জানানো হয়েছে। পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহী অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হতে পারে।
এদিকে ডিসেম্বরের প্রথম সকালেই কুমিল্লায় শীতের অনুভূতি স্পষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার তথ্যমতে, সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে কুমিল্লায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’ এখনো বাংলাদেশের উপকূল থেকে অনেকটা দূরে অবস্থান করছে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
তবে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই। বর্তমানে ঝড়টির কেন্দ্রের আশপাশে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে।
উত্তাল সমুদ্রের কারণে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, ডিসেম্বর মাসে সাধারণত সমুদ্রের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য উপযোগী থাকে না। সে কারণে বছরের বাকি সময়ে উপকূলে নতুন কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা নেই।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম থাকায় কৃষকরা আপাতত স্বস্তিতে রয়েছেন। আলু, ভুট্টা, সরিষা, পেঁয়াজ ও রসুনসহ শীতকালীন শস্যের রোপণ কাজে ইতোমধ্যেই গতি এসেছে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শীতের প্রকোপ বাড়ছে। সকালবেলায় হাড়কাঁপানো ঠান্ডার কারণে সড়কে মানুষের চলাচল তুলনামূলক কম দেখা যাচ্ছে। গতকাল রবিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা আগের দিনের তুলনায় সামান্য কম।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশার প্রভাবে বিমান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সকালে বেশিরভাগ ফ্লাইট অন্তত আধা ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। বারবার সময়সূচি পরিবর্তনের কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আকাশ পরিষ্কার হলেই ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হবে। আপাতত কোনো ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস অনুযায়ী, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময়টিই চলতি মৌসুমের সবচেয়ে শীতল পর্ব হতে পারে। এই সময়ে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল কাঁপতে পারে, যা কৃষিকাজ, পরিবহন ব্যবস্থা ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বাড়াবে ভোগান্তি।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘শীত ধীরে ধীরে বাড়ছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে তীব্র শীত পড়তে পারে এবং শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
সব মিলিয়ে দেশের উত্তরাঞ্চলে ইতোমধ্যেই শীতের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, আর সামনে আরও কঠোর শীতের ইঙ্গিত দিচ্ছে আবহাওয়া পরিস্থিতি।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC