
রীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা (ব্লাড সুগার) ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তা ডায়াবেটিস বা প্রিডায়াবেটিসের পূর্বাভাস দিতে পারে। মনে রাখতে হবে, এই পরিস্থিতিতে সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে তা হৃদরোগ, কিডনির ক্ষতি, অথবা স্নায়ুর সমস্যার মতো গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
অনেক সময় শরীর কিছু প্রাথমিক সতর্ক সংকেত দেয়। দুঃখের বিষয় হলো, এই লক্ষণগুলো আমরা প্রায়শই দৈনন্দিন ক্লান্তি বা সামান্য অসুস্থতা ভেবে ভুল করি এবং এড়িয়ে যাই।
আপনার রক্তে শর্করা বেড়ে গেছে কিনা, তার ইঙ্গিত দিতে পারে এমন ৫টি সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ নিচে তুলে ধরা হলো:
১. সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগা: যদি পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নেওয়ার পরেও আপনার সারাক্ষণ ক্লান্তি অনুভূত হয়, তবে এটি উচ্চ রক্তে শর্করার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হতে পারে। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে শরীরের পক্ষে সেই চিনিকে শক্তিতে রূপান্তর করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলস্বরূপ, শরীরে শক্তির ঘাটতি দেখা দেয় এবং ক্লান্তি চেপে বসে।
২. অতিরিক্ত তৃষ্ণা ও ঘন ঘন প্রস্রাব: হঠাৎ করে খুব বেশি তৃষ্ণা পাওয়া এবং বারবার বা ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন হওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম পরিচিত লক্ষণ। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অত্যধিক হলে কিডনি সেই অতিরিক্ত চিনিকে শরীর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত কাজ শুরু করে। এই প্রক্রিয়ায় শরীর থেকে বেশি পরিমাণে জল (পানি) বেরিয়ে যায়, যা পানিশূন্যতা ও তীব্র তৃষ্ণা সৃষ্টি করে।
৩. চোখ ঝাপসা দেখা: দৃষ্টিতে ঝাপসা ভাব আসা বা কোনো বস্তুর উপর ফোকাস করতে অসুবিধা দেখা দিলে দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা প্রয়োজন। রক্তে গ্লুকোজের আধিক্য চোখের ভেতরের তরল পদার্থের পরিবর্তন ঘটায়, যা চোখের লেন্সের উপর প্রভাব ফেলে এবং সাময়িকভাবে দৃষ্টি ঝাপসা করে দেয়।
৪. ক্ষত সারতে সময় লাগা: শরীরের ছোটখাটো কাটা বা আঁচড় যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় নিয়ে সারে, তবে এটিও সতর্ক হওয়ার লক্ষণ। রক্তে অতিরিক্ত চিনির উপস্থিতি শরীরের রক্ত চলাচল এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে শরীরে কোনো ক্ষত শুকিয়ে উঠতে বা নিরাময় হতে দেরি হয়।
৫. হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া: আপনি যদি আপনার খাদ্যাভ্যাস না বদলে থাকেন, তারপরও যদি হঠাৎ করে আপনার ওজন কমতে শুরু করে, তবে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা আবশ্যিক। যখন ইনসুলিনের সমস্যার কারণে শরীর গ্লুকোজকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না, তখন এটি বিকল্প পথ হিসেবে শরীরের সঞ্চিত চর্বি ও পেশি ভাঙতে শুরু করে। এর ফলেই দ্রুত ওজন হ্রাস পায়।
সূত্র : Mayo Clinic









