
আপনি হয়তো প্রি-টিন বয়স থেকে গোসল করছেন, কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন – আপনি কি ঠিকভাবে গোসল করছেন? চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যকর ত্বক ও চুলের জন্য গোসলের রুটিন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গরম পানিতে ঢুকে ময়লা, তেল ও ঘাম ধুয়ে ফেলা সহজ হলেও, গোসলকে আরও কার্যকর করার কিছু কৌশল রয়েছে।
সঠিকভাবে গোসল করা শেখা আপনাকে কেবল পানি বাঁচাতে, বিদ্যুৎ খরচ কমাতে এবং ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হওয়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে, বরং এটি আপনার সামগ্রিক পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যকেও উন্নত করবে।
চলুন আজ জেনে নিই কীভাবে আপনার গোসলের সময় সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করা যায় এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা যায়।
সঠিকভাবে গোসল করার ধাপসমূহ
অনেকে মনে করেন, প্রতিদিন গোসল করা বাধ্যতামূলক, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন – আসলে তা দরকার নেই। বিশেষ করে শীতকালে, যখন বাতাস শুষ্ক এবং আমরা খুব বেশি ঘামি না, তখন সপ্তাহে কয়েকবার গোসল করাই যথেষ্ট। তবে, কেউ কেউ মানসিক পরিচ্ছন্নতা ও আরামের জন্য প্রতিদিন গোসল করেন। যে কোনো অবস্থাতেই, পুরো দেহ পরিষ্কার করা গুরুত্বপূর্ণ।
করণীয় ধাপগুলো নিম্নরূপ:
১. পানির তাপমাত্রা ঠিক করুন: গোসলের জন্য অতিরিক্ত গরম পানির প্রয়োজন নেই। বিশেষজ্ঞরা ত্বক ও চুলের সুরক্ষার জন্য হালকা গরম বা লুকওয়ার্ম (ঈষদুষ্ণ) পানি ব্যবহার করার পরামর্শ দেন।
২. দেহ ভিজিয়ে নিন: সাবান ব্যবহারের আগে শাওয়ারের নিচে পুরো ত্বক ভালো করে ভিজিয়ে নিন।
৩. সাবান বা বডিওয়াশ ব্যবহার: একটি লুফা, ধোয়ার কাপড় বা হাত ব্যবহার করে সাবান বা বডিওয়াশ দিয়ে গলা থেকে শুরু করে দেহের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ধুয়ে নিন। পায়ের পাতা এবং আঙুলের মাঝের অংশও পরিষ্কার করতে ভুলবেন না।
৪. সাবান ধুয়ে ফেলুন: ত্বক শুষ্ক হওয়া এড়াতে, সমস্ত সাবানের অবশিষ্টাংশ ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন।
চুল ধোয়ার সময় কিছু বিশেষ নিয়ম অনুসরণ করা উচিত:
শ্যাম্পু ব্যবহার: সামান্য শ্যাম্পু হাতে নিয়ে মাথায় লেগিয়ে শুধু স্ক্যাল্প এবং ঘাড়ের পেছন দিকে মসাজ করুন। চুলের প্রান্তে সরাসরি শ্যাম্পু লাগানো এড়িয়ে চলুন।
কন্ডিশনার ব্যবহার: হাতে কন্ডিশনার নিয়ে চুলে মসাজ করুন, বিশেষ করে চুলের প্রান্তে। এটি চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
ধুয়ে ফেলা: চুল ও দেহ ঠান্ডা বা হালকা গরম পানিতে ধুয়ে নিন। এটি কন্ডিশনারকে চুলে ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং দেহকে সতেজ করে।
গোসল শেষে যত্নের রুটিন
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার: গোসল শেষে হালকা তোয়ালে দিয়ে ত্বক শুকিয়ে নিন (পুরোপুরি শুকনো নয়)। ত্বক সামান্য ভেজা থাকা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
যা করা উচিত নয়
অতিরিক্ত গরম পানি: অতিরিক্ত গরম পানি ত্বককে শুষ্ক করে দেয় এবং ত্বকের প্রাকৃতিক তেল (সিরাম) নষ্ট করে ফেলে।
অতিরিক্ত স্ক্রাবিং: অতিরিক্ত ঘষাঘষি করা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। হালকাভাবে পরিষ্কার করুন।
মুখ ধোয়া এড়ানো: গোসলের সময় মুখ ধোয়া এড়িয়ে যাবেন না। তবে মুখের সংবেদনশীল ত্বকের জন্য আলাদা প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন।
লুফা পরিবর্তন: লুফা বা স্পঞ্জ পরিষ্কার না রাখলে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে। তাই নিয়মিত এগুলো পরিষ্কার করুন এবং সময়মতো বদলাতে ভুলবেন না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মোটামুটি ৫ থেকে ১০ মিনিট গোসল করার জন্য যথেষ্ট। এর চেয়ে বেশি সময় ধরে গোসল করলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
সাধারণভাবে দিনে দুইবার গোসল করার প্রয়োজন নেই। অতিরিক্ত গোসল ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। তবে যদি আপনি দিনে একাধিকবার ব্যায়াম করেন, খুব বেশি ঘামেন, বা বাইরে দীর্ঘ সময় থাকেন, তাহলে দিনে দুইবার গোসল প্রয়োজন হতে পারে।
গোসল করা কোনো জটিল প্রক্রিয়া নয়। নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতি এবং প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন, যাতে শাওয়ার শেষে ত্বক হয় স্বাস্থ্যবান ও উজ্জ্বল।
সূত্র: হেলথলাইন
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC