
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ গঠনে ব্যয়ের পদ্ধতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বুধবার (১৬ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি।
সংস্থাটি বলেছে, সরকারি অর্থ ব্যয়ে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা এড়িয়ে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির যুক্তিতে কাজ দেওয়া হয়েছে। এটি রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানিয়েছে টিআইবি।
এতে বলা হয়, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্টের মধ্যে জাদুঘরের রূপান্তরের কার্যক্রম শেষ করতে যে ধরনের নির্মাণ বা সংস্কারকাজ করতে হবে, সেই কাজ হবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে, অর্থাৎ দরপত্র ডাকা হবে না।
দরপত্র ছাড়া এ ক্রয় প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অভ্যুত্থানের স্মৃতিচিহ্ন, শহীদদের স্মারক ও আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়নের ঘটনা তুলে ধরার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, অর্থাৎ গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর করার প্রশংসনীয় উদ্যোগটি এখন প্রশ্নের মুখে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জাদুঘরের রূপান্তরের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রকল্পের সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই গৃহীত হয়েছিল এবং ক্রয়নীতি অনুযায়ী যথাযথ নীতি অনুসরণের জন্য সময়ও হাতে ছিল। অথচ প্রায় সাত মাস সময় পার করে নির্ধারিত সময়সীমার তিন সপ্তাহ আগে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি বেছে নিয়ে সরকারি ক্রয় বিধিমালার ৭৬(১) ও ৭৬(২) ধারাকে পাশ কাটানো হয়েছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘এ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ও যান্ত্রিক (ইএম) এবং পূর্ত খাতের প্রায় ১১১ কোটি টাকার কাজ দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন হলো, নিয়মিত এ ক্রয়ের জন্য কেন সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে? এ কাজের জন্য যে দুটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হলো, তা কীসের ভিত্তিতে? কোন যুক্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচিত করা হলো; কার্যাদেশের মূল্য নির্ধারণের ভিত্তিইবা কী? এ ক্ষেত্রে ব্যয়িত অর্থের ‘ভ্যালু ফর মানি’ কীভাবে নিশ্চিত হবে– এসব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর ছাড়াই এভাবে কাজ দেওয়ায় প্রক্রিয়াটি কী যোগসাজশমূলক এবং পক্ষপাতদুষ্ট– এমন প্রশ্ন ওঠা অমূলক নয়। এত বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে কোনো উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া কাজ দেওয়ায় রাষ্ট্রীয় সম্পদের যথাযথ ও সদ্ব্যবহারের প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।’