বুধবার ১৩ আগস্ট, ২০২৫

জুলাইয়ে সড়কে ঝরল ৫২০ জনের প্রাণ, আহত হাজারের বেশি

রাইজিং ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার আবারও উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। জুলাই মাসে সারা দেশে ৫০৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২০ জন নিহত এবং ১৩৫৬ জন আহত হয়েছেন। এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

দুর্ঘটনার চিত্র ও কারণ:

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যানুযায়ী, জুলাই মাসে ১৬২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৯ জন নিহত ও ১৪৪ জন আহত হয়েছেন। এটি মোট দুর্ঘটনার ৩২.০১%, নিহতের ৩২.৫০% এবং আহতের ১০.৬১%।

বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, যেখানে ১২২টি দুর্ঘটনায় ১৩০ জন নিহত এবং ২৯৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা হয়েছে বরিশাল বিভাগে, যেখানে ২৩টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ৯৫ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • বর্ষার কারণে সড়কে সৃষ্ট ছোট-বড় গর্ত।
  • সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা ও নসিমন-করিমনের অবাধ চলাচল।
  • জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং এবং সড়কবাতির অভাব।
  • সড়কে মিডিয়ান বা রোড ডিভাইডার না থাকা এবং গাছপালার কারণে অন্ধ বাঁকের সৃষ্টি হওয়া।
  • যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য এবং অদক্ষ চালক।
  • ফিটনেসবিহীন ও অতিরিক্ত যাত্রী বহনকারী যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল।

প্রতিরোধে সুপারিশ:

যাত্রী কল্যাণ সমিতি দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশও করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামত করা।
  • জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতে পর্যাপ্ত আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।
  • দক্ষ চালক তৈরি এবং যানবাহনের ফিটনেস ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিশ্চিত করা।
  • গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে ফুটপাতসহ সার্ভিস লেন তৈরি করা।
  • সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ এবং চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা।
  • মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া।
  • মোটরসাইকেল এবং ব্যাটারিচালিত রিকশার আমদানি ও নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণ করা।

অন্যান্য পথের দুর্ঘটনা:

সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি রেলপথ ও নৌপথেও দুর্ঘটনা ঘটেছে। জুলাই মাসে রেলপথে ৩৪টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৪১ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৪টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭ জন, আহত ১৪ জন এবং ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সব মিলিয়ে, সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৫৫৪টি দুর্ঘটনায় ৫৬৮ জন নিহত এবং ১৪১১ জন আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন