
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নতুন শ্রমিক অঙ্গ সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’। ঐক্য, সংগ্রাম, মর্যাদা ও মুক্তির পতাকা হাতে শ্রমিকের রাষ্ট্রক্ষমতা প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী অঙ্গীকার নিয়ে শুক্রবার (আজ) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে ইস্কাটন নেভি কলোনিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
সংগঠনটির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মাজহারুল ইসলাম ফকির, সদস্য সচিব রিয়াজ মোরশেদ এবং মুখ্য সংগঠক আরমান হোসেন।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি এই সময় দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন যে জাতীয় নাগরিক পার্টি শ্রমিকদের পক্ষে রাজনীতি করবে। বিগত ১৬ বছরের শেখ হাসিনার শাসন ব্যবস্থাকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এই সময়ে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন শ্রমিকরা। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে ন্যায্য মজুরির দাবিতে চব্বিশ সালের শুরুর দিকেও শ্রমিকদের আন্দোলনে নামতে হয়েছিল এবং পুলিশের গুলিতে শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। সেই সময় শ্রমিকদের কোনো অধিকার ছিল না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “যেই দিনে কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে, সেই দিনে জাতীয় শ্রমিক শক্তি রাজপথে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। আমরা জানি রাজপথের শক্তি জয়ী হয়। ইনশাআল্লাহ জাতীয় শ্রমিক শক্তিও জয়ী হবে।”
রাজনৈতিক দলের ঐক্যকে প্রকৃত জাতীয় ঐক্য হিসেবে মানতে নারাজ নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য তখনই হয়, যখন সমাজের সব অংশের মানুষ দেশপ্রেমের ভিত্তিতে এক হয়ে লড়াই করে। তিনি উদাহরণ হিসেবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সেসময় কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানার দেখিনি। শুধু দেখেছিলাম ছাত্র-শ্রমিক এবং নানান পেশাজীবী। আমরা সেই জাতীয় ঐক্যের দিকে এগোচ্ছি, যেখানে ছাত্র-শ্রমিক কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করবে লড়াই করবে।”
অনুষ্ঠানে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, জাতীয় শ্রমিক শক্তি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে বাংলাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের প্রতি অসম্মানের আচরণ করা হয় এবং রাষ্ট্রীয়ভাবেও এই বৈষম্য চালানো হচ্ছে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিগত কয়েক বছরে হাজারো শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু তাদের হত্যার জন্য দায়ীদের তেমন বিচার হয়নি।