
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুর ছেরু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় ভুক্তভোগীর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত ছেরু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাত মাস আগে কুমিল্লার শ্রীপুর ইউনিয়নের প্রবাসী ছেরু মিয়ার ছেলের সঙ্গে মুঠোফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে ভিকটিমের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর শাশুড়ির অসুস্থতার কথা বলে শ্বশুর ছেরু মিয়া তাকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসে।
এরপর, চার মাস আগে তার স্বামী বিদেশ থেকে ছুটিতে দেশে ফিরে আসেন। গত ১৮ মার্চ ভিকটিম আল্ট্রাসনোগ্রাফি করালে তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা যায়। রিপোর্ট দেখে তার স্বামী কারণ জানতে চাইলে ভিকটিম জানান, তার শ্বশুর একাধিকবার তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে এবং কাউকে কিছু না বলতে হুমকি দিয়েছে।
গর্ভধারণের বিষয়টি জানার পর, ভিকটিমের স্বামী ও শাশুড়ি তাকে গর্ভপাতের জন্য প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু রাজি না হওয়ায় তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং ঘরে আটকে রাখা হয়। ভিকটিমকে গর্ভপাত করাতে চাপ দিতে ১০ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
কৌশলে বিষয়টি তার মাকে জানালে, ভিকটিমের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই অভিযুক্ত ছেরু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ভিকটিমের স্বামী বলেন, “আমার বাবার অপরাধের শাস্তি হোক, তবে আমি সামাজিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে চাই।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুর রহমান ও সর্দার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে তারা অবগত আছেন এবং ভিকটিমের স্বামী তাকে গ্রহণ করতে আগ্রহী।
বর্তমানে ভিকটিম মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।