সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

চীনে তরুণদের বেকারত্বের হারে রেকর্ড, ২১ শতাংশই বেকার

Record youth unemployment rate in China, 21 percent unemployed
চীনে তরুণদের বেকারত্বের হারে রেকর্ড, ২১ শতাংশই বেকার। ছবি: এএফপি

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব রেকর্ড সংখ্যক বেড়েছে। গত জুনে এই তথ্য প্রকাশ করে চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো। এ তথ্য অনুযায়ী, দেশটির মোট কর্মক্ষম নারী-পুরুষের ২১ শতাংশই বর্তমানে বেকার।

গত জুলাইয়ে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে চীনের সরকারি পরিসংখ্যান দপ্তর এনবিএস। এটি জুন মাসের বেকারত্বের হিসেব। জুলাই মাসের কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি। তবে মঙ্গলবার চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে এক পোস্টে এনবিএস জানিয়েছে, বেকারত্ব পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে শুরু করলে এ বিষয়ক পরবর্তী পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হবে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে কারখানার উৎপাদন ও খুচরা বিক্রয় প্রত্যাশার চেয়ে হতাশাজনকভাবে কমে যাওয়ায় মানুষ কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা হচ্ছে।

এর মধ্যে তরুণদের বেকারত্ব নিয়ে হতাশাজনক পরিসংখ্যান প্রকাশ করে পরিসংখ্যান ব্যুরো। ধারণা করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা কমে গেলে এবং উদ্বেগ বেড়ে গেলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় চীন সরকার প্রকাশিত পরিসংখ্যান স্থগিত করেছে।

এনবিএসের সেই পোস্টটি ভিউ করেছেন ১৯ কোটি ওয়েইবিও ব্যবহারকারী। ব্যবহারকারীরা অবশ্য এই পোস্ট দেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্রুপ, কটাক্ষ ও সমালোচনাপূর্ণ মন্তব্যে পোস্টের কমেন্টবক্স ভরে ফেলেছেন। এক ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘বাস্তবে চীনে বেকারত্বের সমস্যা কত ভয়াবহ আকার নিয়েছে— তা আমি কল্পনা করতেও ভয় পাই। এনবিএসের হিসাবের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হবে সেই পরিসংখ্যান। বাস্তবতা সম্পর্কে এনবিএসের কোনো ধারণা নেই।’

আরেক ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘এনবিএস মনে করছে, তারা বিবৃতি দেওয়া বন্ধ করলেই দেশের বেকার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।’

মঙ্গলবার বেইজিংয়ের লি নুয়োজুন নামের ১৮ বছর বয়সী এক বিশ্ববিদ্যালয় এএফপিকে জানান, তার পড়াশোনা শেষ হয়নি, কিন্তু এখন থেকে তার আশঙ্কা জাগছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেওয়ার পর চাকরি মিলবে কিনা।

‘আমার অনার্সের মেজর সাবজেক্ট এনভায়ার্নমেন্টাল ডিজাইন। কিন্তু যেভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবহার বাড়ছে, তাতে পড়াশোনা শেষে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমার চাকরি পাওয়ার আশা কম।’

‘ভবিষ্যতের কথা ভাবলে আমার খুব দুশ্চিন্তা হয়। রীতিমতো অসুস্থ বোধ করি। এ কারণে যতদূর সম্ভব চাকরি নিয়ে চিন্তাভাবনা কম করার চেষ্টা করছি,’ এএফপিকে বলেন নুয়োজুন।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আইটি সেকশনে কর্মরত গুও (৩৫) এএফপিকে জানান, ‘কর্মসংস্থান নিয়ে তরুণ প্রজন্ম ভয়াবহ চাপে রয়েছে। আমার ছোটো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। সে এবং তার বন্ধুরা একই সঙ্গে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, দেশটির ইতিহাসে এই পরিমাণ বেকারত্ব আগে পরিলক্ষিত হয়নি।