মে ১৫, ২০২৫

বৃহস্পতিবার ১৫ মে, ২০২৫

চালু হলো বাজারভিত্তিক বিনিময় হার, ডলারের দাম স্থিতিশীল

Rising Cumilla - Dollar
ডলার/ফাইল ছবি/এএফপি

বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর দ্বিতীয় দিনেও দেশের মুদ্রা বাজারে ডলারের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) আমদানি ঋণপত্রের (এলসি) নিষ্পত্তির জন্য বেশিরভাগ ব্যাংক ডলার প্রতি ১২২ টাকা লেনদেন করেছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এদিন ব্যাংকগুলোর ট্রেজারি প্রধানদের এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এই অভিন্ন দর নির্ধারণ করা হয়। তবে ব্যতিক্রম দেখা গেছে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ক্ষেত্রে। গ্রাহকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ব্যাংক দুটি প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ১২২ টাকা ৫০ পয়সা দরে কিনেছে। তারা জানিয়েছে, লাভের বিষয়টি মুখ্য না রেখে গ্রাহকদের সুবিধা দেওয়াকেই তারা প্রাধান্য দিচ্ছে।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রেজারি প্রধান গণমাধ্যমকে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ডলারের দাম নিয়ে কোনো ধরনের মৌখিক নির্দেশনা আসেনি।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, সামনে ঈদ-উল-আজহা। এই সময় সাধারণত রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ে। ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। এই কারণে বাজারে কোনো অস্বাভাবিকতা কিংবা ডলার সংকট দেখা যায়নি।

উল্লেখ্য, এর আগে গতকাল ১৪ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর ঘোষণা করে। এই নতুন ব্যবস্থার অধীনে ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে দর কষাকষি করে ডলার লেনদেন করতে পারবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

তবে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাজারভিত্তিক হার চালু হলেও ডলারের বিনিময় হার একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যেই থাকবে। একটি ‘অঘোষিত ব্যান্ড’ বজায় রাখা হবে এবং প্রয়োজনবোধে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে হস্তক্ষেপ করবে—ডলার কিনবে অথবা বিক্রি করবে।

এর আগে, ডলারের ক্রয় ও বিক্রয় দরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ টাকার পার্থক্য রাখার বাধ্যবাধকতা ছিল। গত ১৩ মে একটি সার্কুলারের মাধ্যমে সেই নিয়মও বাতিল করা হয়েছে।

গত কয়েক মাস ধরে ব্যাংকগুলো সাধারণত ১২২ থেকে ১২২.৫০ টাকা দরে ডলার লেনদেন করে আসছে। বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর পরেও আপাতত সেই দামেই স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে, যা ঈদের আগে আমদানিকারক ও সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির খবর বলে ধরে নেওয়া যাচ্ছে।

বিশ্লেষকদের অভিমত, প্রকৃত বাজারভিত্তিক বিনিময় হার কার্যকর করতে হলে একটি স্বচ্ছ ও নমনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।

আরও পড়ুন