
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার সূইলপুর ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে ইলিয়টগঞ্জ থেকে বড়ইয়া কৃষ্ণপুর হয়ে বশিকপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ৬ কিলোমিটার রাস্তা। এই সড়কটি শুধু দুটি গ্রামের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে না, বরং এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
তবে দীর্ঘকাল ধরে সংস্কারের অভাবে এবং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সড়কটি বর্তমানে তার কার্যকারিতা হারিয়েছে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের বেশিরভাগ অংশ ভেঙেচুরে গেছে, তৈরি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। বৃষ্টির পানি জমে এসব গর্ত মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে, বর্ষাকালে রাস্তার এই ভগ্নদশা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। তখন সাধারণ যাত্রীবাহী যানবাহন, যেমন রিকশা, সিএনজি, অটো-রিকশা এমনকি ব্যক্তিগত গাড়িও চলাচল করতে হিমশিম খায়। অনেক সময় যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে, আহত হন যাত্রী ও পথচারীরা।
এছাড়া, পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত ট্রাক ও ভ্যান এই রাস্তা দিয়ে যেতে চায় না, যার ফলে স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজারে পৌঁছাতে দেরি হয়। এতে একদিকে যেমন কৃষকরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহও ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীরা জানান, ইউনিয়নের যোগী মার্কেট এলাকার খালের উপর পুরাতন সেতুটি ভেঙ্গে যে ড্রাইভারসন রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছিল সেটি এখন অনেক পানির নিচে চলে গেছে। যা মানুষের ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এই রাস্তাটি মেরামত করার জন্য তারা বারবার স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু তাদের আবেদনে কোনো সাড়া মেলেনি।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন যে, প্রায় প্রতি বছরই রাস্তার কিছু অংশ মেরামত করা হলেও তা টেকসই হয় না। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই আবার রাস্তা ভেঙেচুরে যায়। ইলিয়টগঞ্জ, বড়ইয়া কৃষ্ণপুর ও বশিকপুর মধ্যকার এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী আরও কয়েকটি এলাকার মানুষ চলাচল করে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষ, এবং ব্যবসায়ীরা এই রাস্তার কারণে চরম ভোগান্তির শিকার। রোগীদের হাসপাতালে নিতেও অনেক সময় লাগে, যা অনেক ক্ষেত্রে জীবনহানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এলাকাবাসীরা জানান, একটি মানসম্মত এবং টেকসই রাস্তা নির্মাণ হলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতি পাবে এবং মানুষের দুর্ভোগের অবসান হবে। কর্তৃপক্ষের উচিত শুধু লোক দেখানো কাজ না করে, একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় সড়কটি সংস্কার করা, যাতে করে ভবিষ্যতে একই সমস্যা বারবার না হয়। এই সমস্যার সমাধান হলে এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফুটবে এবং জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হবে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা এলজিইডি অফিসের সহকারী প্রকৌশলী দীপু সূত্র ধর জানান, রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ আমরা সেটা জানি তবে এ রাস্তার ব্যাপারে মন্ত্রণালয় কাগজপত্র জমা আছে । ওইখান থেকে সব অনুমোদন হয়ে আসলে অতি দ্রুত সময় কাজ শুরু করা হবে।









