
কুমিল্লার চান্দিনায় ছাদ থেকে ফেলে দারোয়ান সোহেল হত্যার ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। অভিযুক্ত প্রেমিক যুগল কিংবা বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধেও নেওয়া হয়নি কোনো আইনি ব্যবস্থা, যা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও বিস্ময় বিরাজ করছে।
ঘটনাটি ঘটে গত ১৬ আগস্ট রাতে। চান্দিনা পল্লী বিদ্যুৎ রোডে শিহাব নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ভবনের ছাদে এক প্রেমিক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে দারোয়ান সোহেল।
তাদের ভিডিও ধারণের পর উভয়ের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সোহেলকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ আগস্ট সকালে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, বাড়ির মালিক শিহাব নানা প্রলোভন দিয়ে তাদের মামলা না করতে চাপ দিয়েছেন। সোহেলের মা সালমা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে তিন রোমের একটি বিল্ডিং এর কাজ শুরু করেছিল।
চারদিকে ইটের গাঁথুনি দেয়া আছে এখনও ছাদ দেওয়া হয়নি। শিহাব বলেছেন, তিনি বিল্ডিং এর কাজ শেষ করে দিবেন। আমার ছেলে সোহেলের পরিবারকে সারা জীবন দেখাশোনা করবেন।’
নিহতের স্ত্রী রোজিনা বলেন, ‘আমার স্বামীকে যে যন্ত্রণা দিয়ে মারা হয়েছে, আমি চাই ঠিক সেভাবেই অপরাধীদের শাস্তি হোক। নাম প্রকাশ না করা শর্তে শিহাবের বাসার একাধিক ভাড়াটিয়া জানান, সোহেল শুধু গরুর ফার্মের কাজই করত না, সে ওই বাসার ভাড়াও আদায় করতো। একই সঙ্গে বাসায় ভাড়াটিয়া উঠানোর কাজও করতো সে।
এ দিকে মামলা না করতে চাপ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাড়ির মালিক শিহাব। তিনি বলেন, ‘নিহতের পরিবার যে অভিযোগ দিচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ যখন ঘটনা ঘটেছে তখন আমি নিজেই থানায় ফোন করে পুলিশ নিয়ে আসি এবং ভুক্তভোগীর পরিবারকে মামলা করার জন্য বলি। কিন্তু তারা কোন ভাবেই মামলা করতে রাজি হয়নি।’
নিহতের পরিবারকে প্রলোভন দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিহত সোহেল আমার কর্মচারী ছিল। মানবিক কারণে আমি তার পরিবারকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি।’
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার দিন আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। কিন্তু তারা কোন ভাবেই মামলা করতে রাজি হয়নি এবং কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই মর্মেও আমাদের কাছে তারা লিখিত দিয়েছেন।’
চান্দিনা ও দাউদকান্দি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তানভীর ফয়সাল বলেন, ‘চান্দিনা থানার ওসি আমাকে জানিয়েছেন ভিকটিমের পরিবার মামলা করতে রাজি না। এমনকি তারা নিহতের ময়নাতদন্ত পর্যন্ত করেননি। পরিবার থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় এখন পর্যন্ত মামলা গ্রহণ করা হয়নি।