
কুমিল্লায় চান্দিনায় ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী শব্দর আলী (৪৫) আত্মহত্যায় মৃত্যু বরণ করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
মৃত্যুর তিন মাস পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী রিনা বেগম। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে ৩ জকে আটক করেছে চান্দিনা থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বরকইট গ্রামের মৃত আহাম আলীর ছেলে মো. ইউনুছ মিয়া (৫২), মো. আবুল হাশেম (৪২) ও মো. কুদ্দুস মিয়া (৫৫)।
নিহতের স্ত্রী মামলার বাদী রিনা বেগম জানান- আমাদের পাশ্ববর্তী বাড়ির ইউনুছ ও তার ভাইয়েরা জমি বন্ধক দিয়ে এক বছর মেয়াদে আমার স্বামীর কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা নেয়। মেয়াদ শেষে তারা আমাদেরকে জমি থেকে সরিয়ে দিলেও টাকা ফেরত দেয়নি।
এ ঘটনায় একাধিবার ঝগড়া বিবাদও হয়েছে। চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল ভোরে আমার স্বামী প্রতিদিনের ন্যায় মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করতে যায়। নামাজ শেষে তিনি বাড়ি না আসায় আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করি। সকাল সাড়ে ৮টায় বিবাদী ইউনুছ মিয়া আমাদেরকে জানায় আমার স্বামী বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে গাছের সাথে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।
খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার স্বামীর অর্ধেকেরও বেশি শরীর মাটিতে লুটে পড়ে আছে, মাথার অংশ গাছের সাথে বাঁধা। সে সময় আমরা মানসিকভাবেও চরম বিপর্যস্ত থাকায় থানায় আত্মহত্যার অভিযোগ করি। কিন্তু আমাদের ধারণা ছিল আমার স্বামীকে হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
তিন মাস পর ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে উঠে আসে আমার স্বামীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট হাতে পেয়ে আমি ইউনুছ মিয়া, তার স্ত্রী ও তিন ভাইকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান- ১৫ এপ্রিল বরকইট গ্রামের একটি পুকুর পাড়ের গাছের সাথে ঝুলে থাকা ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী শব্দর আলীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হওয়ার পর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। নিহতের ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে উঠে আসে শব্দর আলী আত্মহত্যা করেনি, তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ৩ জনকে আটক করেছি, বাকিদেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।