
টানা ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট তীব্র জলপ্রবাহে চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ততম বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ভেঙে দুই ভাগ হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ভোরে অক্সিজেন এলাকার স্টার শিপ গলি সংলগ্ন অংশে এ ঘটনা ঘটে। এতে সড়কের এক পাশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে অন্য পাশ দিয়ে সীমিতভাবে যান চলাচল করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান বিষযটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোর থেকে টানা ভারী বর্ষণের কারণে পানির প্রবল চাপেই সেতুটি ভেঙে যায়।
আনিসুর রহমান বলেন, ১৯৮০ সালের দিকে নির্মিত ইটের তৈরি সেতুটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খাল প্রশস্ত হওয়ায় পানিপ্রবাহ বেড়ে যায় এবং দীর্ঘদিন ধরে সেতুর পাশে মাটি সরে যেতে থাকে। এতে দেয়াল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আজকের বর্ষণে সেটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে যায়।
সেতুটি অক্সিজেন থেকে নগরের ২ নম্বর গেটমুখী পথে অবস্থিত। এ পথ ব্যবহার করে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। এর আশপাশে রয়েছে বহু পোশাক কারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ও নাজিরহাট রুটে ট্রেন চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, জনদুর্ভোগ লাঘবে অবিলম্বে সেতুটি পুনর্নির্মাণ শুরু করতে হবে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় আগেই সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে পাঁচ কোটি টাকার প্রাক্কলন করে দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। দ্রুত কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন প্রকৌশলীরা।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক শামসুল ইসলাম জানান, ভাঙা অংশের পাশ দিয়ে চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যপাশ দিয়েও সীমিতভাবে গাড়ি চললেও সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় পুরোপুরি ধসে পড়তে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাত থেকেই চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি হয়েছে। তবে সকালের দিকে বৃষ্টি কমলেও জলজটের কবলে পড়ে অফিসগামী ও কর্মস্থলগামী মানুষ। চট্টগ্রামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে তা কমতে শুরু করেছে। তবে তীব্র হয়েছে গণপরিবহন সংকট।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় (সকাল ৯টা পর্যন্ত) চট্টগ্রামে ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কার আভাস দেওয়া হয়েছে।