চট্টগ্রামে গ্যাসের অপচয় রোধে প্রথম ধাপে ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনার পর এবার দ্বিতীয় ধাপে গ্যাসের আরও এক লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হচ্ছে।
আগামী মাস খানেকের মধ্যে মিটার স্থাপনের সার্ভে করা হবে। মাস দুয়েকের মধ্যে শুরু হবে মিটার স্থাপনের কাজ। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশিন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) ২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন আরও এক লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপনের উদ্যোগ নেন।
এদিকে, মিটার বসানোর কাজ শুরু করতে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর জাপানের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (কেজিডিসিএল)। এরপর থেকে শুরু হবে মিটার বসানোর কাজ।
কেজিডিসিএলের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. নাহিদ আলম জানান, নতুন এ পদ্ধতিতে প্রতি চুলায় গ্রাহকের সাশ্রয় হবে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। মোবাইল ফোনে টাকা রির্চাজের মতোই গ্রাহকরা মিটারে প্রয়োজনীয় গ্যাসের টাকা রিচার্জ করতে পারছেন।
কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, কর্ণফুলী গ্যাসের মোট ৬ লাখ আবাসিক গ্রাহক রয়েছে। এরমধ্যে ন্যাচরাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রথম দফায় ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনে কেজিডিসিএল। জাইকার অর্থায়নে ২০১৫ সালে হাতে নেওয়া ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্যাস সাশ্রয়সহ গ্রাহক ভোগান্তি কমে আসায় প্রিপেইড মিটার স্থাপনে নতুন আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ।
‘আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প’ শিরোনামে ২০২১ এর ফেব্রুয়ারিতে ১ লাখ মিটার স্থাপনের জন্য দ্বিতীয় ধাপে প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল। প্রাথমিক পর্যায়ে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ২৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নে মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। সংস্থাটির নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্পটি মূল উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয়রোধ, সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত ও গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস করা। তবে নানা জটিলতায় পিছিয়ে যায় এ প্রকল্পের কাজ। এরপর প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে সময়।
কেজিডিসিএলের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. নাহিদ আলম বলেন, ‘ইতিমধ্যে ৮৭ হাজার গ্রাহক প্রিপেইড মিটারের আওতায় আসার জন্য আবেদন করেছেন। আরও কিছু আবেদন জমা নেওয়া হবে। সব মিলিয়ে এ প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ গ্রাহক প্রিপেইড মিটার সংযোগ পাবে। প্রিপেইড মিটারের জন্য আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর জাপানের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করা হবে। এরপর থেকে গ্রাহকদের মাঝে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দেওয়া হবে।’
নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে নগর ও জেলার ১ লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগরীর সদরঘাট, বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার, হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী, ইপিজেড, বাকলিয়া, কোতয়ালি, ডবলমুরিং, বন্দর, পতেঙ্গা, আকবরশাহ এবং জেলার হাটহাজারী, সীতাকুন্ড, মিরসরাই, কর্ণফুলী, আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী এবং চন্দনাইশ উপজেলার কেজিডিসিএল গ্রাহকরা প্রিপেইড মিটার পাবেন।
সংস্থাটির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘প্রথম ধাপে ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় কেজিডিসিএল দ্বিতীয় এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।’