
ভাত ছাড়া বাঙালির জীবন যেন অসম্পূর্ণ। দেশ বা বিদেশ—যেখানেই থাকুক না কেন, পাতে ভাত না থাকলে মনে হয় যেন খাওয়াটাই সম্পূর্ণ হলো না। শুধু স্বাদই নয়, ভাত শরীরের জন্য শক্তিরও এক বড় উৎস। তবে প্রশ্ন হলো—ভাত খাওয়ার আদর্শ সময় কখন? সকালে, দুপুরে, নাকি রাতে?
এই বিষয়ে ভারতের একজন পুষ্টিবিদ জানালেন, ভাত খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো দুপুর।
নয়াদিল্লির পিএসআরআই হাসপাতালের ডায়েটিশিয়ান দেবজানি ব্যানার্জি বিভিন্ন গবেষণার ওপর ভিত্তি করে জানিয়েছেন, দুপুরেই ভাত খাওয়া শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী।
কেন দুপুরে ভাত খাওয়া ভালো, তার কারণগুলি তিনি সহজ করে ব্যাখ্যা করেছেন:
১. দুপুরে শরীর সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। এই সময়ে ভাত খেলে তা সহজে হজম হয়ে যায়।
২. ভাতে থাকা ভিটামিন বি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। ৩. ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ: ভাত খেলে পেট ভরা অনুভব হয়, ফলে অযথা বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে আসে।
ভাত খেতে চাইলে কোন চাল সবচেয়ে ভালো?
বাজারে নানা ধরনের চাল পাওয়া যায়—সাদা, বাদামি, লাল ইত্যাদি। সঠিক চাল বাছাই শরীরের জন্য খুব জরুরি।
-সাধারণত সাদা চালই বেশি খাওয়া হয়। তবে এতে ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
-বাদামি ও লাল এই দুই ধরনের চাল ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর। এগুলি শরীরের জন্য অনেক বেশি ভালো, বিশেষত যাঁদের ডায়াবেটিস বা ওজন নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন রয়েছে, তাঁদের জন্য এই চাল উপকারী।
ভাতে ক্যালরি কত?
-১০০ গ্রাম রান্না করা সাদা ভাতে থাকে প্রায় ১৩০ ক্যালোরি।
-একই পরিমাণ বাদামি ভাতে ক্যালরি কিছুটা কম, প্রায় ১১০ ক্যালোরি। তবে বাদামি বা লাল চালে থাকে অতিরিক্ত ফাইবার, যা আপনাকে দীর্ঘক্ষণ শক্তি জুগিয়ে যায়।
রাতে ভাত খাবেন?
০১. ভাত সহজপাচ্য হলেও রাতে বেশি ভাত খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন অথবা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁদের রাতে কম ভাত খাওয়াই ভালো।
০২. ভাতে থাকা কার্বোহাইড্রেট রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ করে বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে যেমন ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে, তেমনই রাতে ঘুমেও সমস্যা হতে পারে।
তবে মনে রাখতে হবে, ভাত খাওয়া একেবারে বন্ধ করতে হবে না। বরং বুঝে, সময় মেনে, এবং পরিমিত পরিমাণে খেলে ভাত শরীরের জন্য উপকারীই। যে কোনো শারীরিক অসুবিধা বা পরিবর্তনের জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সূত্র: এই সময় অনলাইন