
সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেমের কথা শুনলেই অনেকের মনে আসে অনিয়মিত জীবন, আর সময়ের অভাবের চিত্র। এ যেন এক 'ছুটিহীন' পেশা, যেখানে ব্যক্তিগত জীবনের সময় হয়ে যায় সীমিত। প্রিয়জনের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম কাটানোও কঠিন। কিন্তু সত্যি বলতে, এই সম্পর্ক শুধুই কঠিন নয়; বরং এটি আপনার জীবনে নিয়ে আসতে পারে অনন্য অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও সমৃদ্ধির এক নতুন দিগন্ত।
সাংবাদিকরা শুধু খবর তুলে আনেন না, তারা জীবন ও সমাজকে দেখেন এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে। আর সেই গভীর, অনুসন্ধানী দৃষ্টি আপনার প্রেমের সম্পর্ককেও করে তুলতে পারে আরও রঙিন, আকর্ষণীয় এবং শিক্ষণীয়।
এখানে তুলে ধরা হলো একজন সাংবাদিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ১০টি দুর্দান্ত ইতিবাচক দিক, যা চিরাচরিত ধারণাকে বদলে দেবে:
অনেকে সাংবাদিককে নিস্তেজ ভাবলেও, তারা আসলে শহরের সেরা স্থান, ট্রেন্ডি রেস্তোরাঁ, সিনেমা প্রিমিয়ার এবং আকর্ষণীয় পার্টিগুলোর খবর রাখেন। ফলে তাদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালে আপনার সামাজিক জীবনও সমৃদ্ধ হয়। আপনি নতুন জায়গা আবিষ্কার করা এবং সেরা অভিজ্ঞতা উপভোগ করার সুযোগ পাবেন।
একজন সাংবাদিকের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো তার সৃজনশীলতা। যেকোনো গল্প এবং তথ্যকে তারা আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে জানেন। এই গুণ শুধু নিউজরুমেই সীমাবদ্ধ থাকে না, ব্যক্তিগত জীবনেও তা নতুন মাত্রা যোগ করে, ফলে সম্পর্ক কখনও একঘেয়ে হয় না।
সাংবাদিকতার মূল চালিকাশক্তি কখনো অর্থ নয়। কাজের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা থেকেই তারা এই পেশায় আসেন। এটি প্রেমের জীবনে এক বিশেষ সুবিধা এনে দেয়: একজন সাংবাদিক সম্পর্ককে অর্থের মাপকাঠিতে মাপেন না। তারা সময়, যত্ন, মনোযোগ এবং কমিটমেন্টকেই মূল মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণ করেন।
সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত খবরের গভীরে ডুবে থাকেন। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, বিনোদন থেকে শুরু করে মানুষের দৈনন্দিন জীবন—তাদের আগ্রহের পরিধি বিশাল। তাদের সঙ্গে কথোপকথন মানেই প্রতিবার কিছু না কিছু নতুন শেখা। তারা বিভিন্ন মানুষের জীবনের গল্প, সংগ্রাম এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন, আর আপনিও সেই গল্পের অংশ হয়ে ওঠেন।
সাংবাদিকদের অন্যতম প্রশংসনীয় গুণ হলো তাদের বিশ্বস্ততা ও গোপনীয়তা রক্ষা করার ক্ষমতা। পেশাগত জীবনে যেমন তারা সূত্রের তথ্য সুরক্ষিত রাখেন, ঠিক তেমনই ব্যক্তিগত জীবনেও তারা বিশ্বাস ও আস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন।
খবরের পেছনে ছোটা, সাক্ষাৎকার নেওয়া, লেখা, সম্পাদনা—এই শত ব্যস্ততার মাঝেও সাংবাদিকরা চমৎকারভাবে সময় ভাগ করে নিতে পারে। এই মাল্টিটাস্কিং দক্ষতা তাদের ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পর্কেও দারুণভাবে কাজে লাগে, যা তাদের জীবনসঙ্গী হিসেবে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য করে তোলে।
সংবাদ মাধ্যমের কাজের চাপ তাদের শিখিয়ে দেয় কীভাবে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তারা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় পান না। তারা আপনাকে প্রয়োজনীয় স্পেস দেবে এবং বিনিময়ে একই আশা করবে। তারা আপনাকে এক মিলিয়ন প্রশ্ন করে অতিষ্ঠ করবে না, বরং আপনার ব্যক্তিগত সীমানাকে সম্মান জানাবে।
সাংবাদিকের জন্য দিনের শুরু বা শেষ নেই। ব্রেকিং নিউজের পেছনে ছোটা বা রাত জেগে কাজ করা তাদের জীবনের অংশ। পেশার প্রতি তাদের এই অবিচল নিষ্ঠা, পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রতিফলিত হয়। ভালোবাসার ক্ষেত্রেও এই আন্তরিকতা ও মূল্যবোধের ব্যতিক্রম হয় না।
সাংবাদিকরা জানেন, সব কথা মুখে বলা হয় না। অনেক অনুভূতি চোখে, স্বরে বা নীরবতায় প্রকাশ পায়। তাই আপনার মনের অস্থিরতা, কষ্ট বা অনুচ্চারিত দুঃখও তারা সহজে টের পাবে। আপনি না বললেও তারা বুঝতে পারবে, কিছু একটা ঠিক নেই।
সাংবাদিকরা প্রয়োজনে অপরিচিত কাউকে সাহায্য করতেও নিজের সামর্থ্যের বাইরেও যায়। মানুষের প্রতি তাদের সহানুভূতি ও সহায়ক মনোভাব বলে দেয়, তাদের হৃদয় সত্যিই অনেক বড়।
সব মিলিয়ে, একজন সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেম মানে এমন একজন মানুষকে পাওয়া, যিনি নিজের স্বপ্নের মতোই আপনাকেও ভালোবাসবেন। তিনি জানেন, কোনো সম্পর্ক সহজ নয়, কিন্তু পরিশ্রম আর আন্তরিকতাই সেটিকে স্থায়ী করে তোলে।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC