কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ফুলের টব নিয়ে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটেছে। এসময় এক সাংবাদিককে পেশাগত কাজ বাধা দেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। এমনকি ওই সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই হলের ৫০৬ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ওই ঘটনার ভিডিও করায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক রকিবুল হাসানের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তাছাড়া সাংবাদিকদের দৌড় কতটুকু তা দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই সংবাদকর্মী হলেন–ডেইলি বাংলাদেশ–এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি রকিবুল হাসান। ওই সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকারী শিক্ষার্থীরা হলেন—বাংলা বিভাগের হামিদুর রহমান, আইন বিভাগের ওলি আহমেদ দয়াল শাহ, লোকপ্রশাসন বিভাগের ওবায়দুল্লাহ।
তারা তিনজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এদিকে আরেক শিক্ষার্থী হলেন মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুনতাসির মামুন। এছাড়াও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহান ওই সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করতে দেখা যায়।
জানা যায়, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুদীপ চাকমার নিচতলার রুমের সামনে থেকে ফুলের টব নিয়ে আসেন বাংলা ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবদুর সাকুর গাজী।
সুদীপ তা জানতে পেরে সাকুরের রুমের সামনে বিবাদে জড়ায়। পরে সুদীপকে পায়ে ধরে মাফ চাওয়ানো হলে তা নিয়ে ফের সাকুরের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় ওই হলের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে সুদীপ চাকমা বলেন, ‘আমার রুমের সামনে গাছগুলো আমার দাদা উপহার দিয়েছিল। অনেক দিন পর হলে এসে দেখি গাছগুলো নাই। খুঁজতে খুঁজতে ৫০৬ নম্বর রুমের সামনে গাছগুলো দেখে উত্তেজিত হয়ে যাই। পরবর্তীতে আমি উপলব্ধি করলাম, এটা করা উচিত হয়নি।’
বাংলা বিভাগের আবদুর সাকুর গাজী বলেন, ‘প্রথমে সুদীপ আমার সাথে রাগারাগি ও গালিগালাজ করছিল। পরে আবার ক্ষমা চেয়েছে। কিন্তু সবাই মনে করেছে সুদীপ আমার পা ধরে ক্ষমা চেয়েছে। কিন্তু এটা সঠিক নয়। সে নিজেও স্বীকার করেছে। পরে আমার রুমের সামনে এটা নিয়ে সুদীপের ডিপার্টমেন্টের পোলাপান উচ্চবাচ্য করেছে।’
সংবাদকর্মীর ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে হামিদুর রহমান বলেন, ‘ওখানে একটা বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলছিল। পরে হুট করে এক সাংবাদিক এসে ভিডিও করা শুরু করে। হুট করে উনি এখানে ভিডিও করবে কেন? আর উনি সংবাদকর্মী হলেই সব জায়গায় সংবাদ সংগ্রহ করবে?'
অভিযুক্ত আইন বিভাগের শিক্ষার্থী দয়াল বলেন, ‘উনি সাংবাদিক বলে হুট করে ভিডিও ধারণ করতে পারেন না। এটা হলের ইন্টার্নাল বিষয়।’
মার্কেটিং বিভাগের মুনতাসির মামুন প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি আমাকে কল দেওয়ার কে? আমিতো সেখানে একা ছিলাম না। আরো অনেকেই ছিল।’
ভুক্তভোগী সাংবাদিক রকিবুল হাসান বলেন, ‘হঠাৎ হলের মধ্যে চিল্লাচিল্লির শব্দ পাই। এরপর এক শিক্ষার্থী জানায় সেখানে ঝামেলা হচ্ছে। এজন্য আমি সংবাদ সংগ্রহ করতে যাই। কিন্তু ভিডিও চালু করার সাথে সাথেই তারা আমার দিকে তেড়ে এসে ধাক্কা দেয়। তারপর ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, গতকাল বঙ্গবন্ধু হলে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তা সাধারণত হল প্রভোস্ট হ্যান্ডেল করেন। কিন্তু হলে যেহেতু প্রভোস্ট নেই তাই জড়িত ব্যক্তিদের ডিপার্টমেন্টের সাথে আলোচনা করছি। একজন সংবাদকর্মীকে সংবাদ সংগ্রহে কোনোভাবেই বাধা দেওয়া যায় না। তিনি নিজের প্রফেশনাল কাজ করছেন। বরং তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা উচিত ছিল। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC