গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পছন্দের শীর্ষে জায়গা করে নেওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ( সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের আগমনে নব যৌবন ফিরে পেয়েছে লাল সবুজের ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর (রবিবার) ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মধ্য দিয়ে লাল সবুজের ক্যাম্পাসে পা রেখেছেন নবীন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ, কাঁঠালতলা, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, মেইন গেইট, শহীদ মিনার,কেন্দ্রীয় মাঠ, লাভ ব্রীজসহ প্রতিটি চত্বরে তাদের পদধূলিতে মুখরিত করে রাখছেন ১৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের ২৬ তম উদীয়মান বিশ্ববিদ্যালয় । দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে মাত্র ৩কি.মি. দূরে প্রাচীন শিক্ষানগরী শালবন বিহারের কোল ঘেঁষে সালমানপুর গ্রামে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। ভৌগোলিক অবস্হানের কারনে প্রতিটি শিক্ষার্থীর সবচেয়ে পছন্দের তালিকায় রয়েছে লাল মাটির ক্যাম্পাস কুবি।
গত রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। নানা আয়োজনে প্রতিটি বিভাগ নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিয়েছে। ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে নবীন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাদের সোনালি জীবনের অধ্যায় শুরু করেছে।স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে শিক্ষার্থীরা ভর্তিযুদ্ধে কৃতকার্য হয়ে নিজেদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন । কুমিল্লার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় যদিও একটা সময় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে তেমন কেউ চিনতো না। তবে শিক্ষা,গবেষণা এবং পাঠদানে অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে দেশ তথা বিদেশের মাটিতেও তাদের সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেই চলেছেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বলতেই ভেসে উঠে হাজারো তারুণ্যের স্বপ্নময় মুখ। প্রতিবছর নতুনদের আগমনে মাতিয়ে তোলে পুরো ক্যাম্পাসের প্রতিটি চত্বর।এদিকে স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থীদের জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় মুহূর্ত হলো ক্যাম্পাসের প্রতিটি সেকেন্ড। চান্স পাওয়ার পর প্রত্যেকেই স্বপ্নের ক্যাম্পাস নিয়ে মনে মনে আঁকতে থাকে নানান স্বপ্ন, নানান পরিকল্পনা। সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হাজারও নবীন শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন চত্বর বা আঙিনা।
ইংরেজি বিভাগের ১৭ তম আবর্তনের মায়িশা মৌমি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমদিনের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মত না। উচ্চ মাধ্যমিক গন্ডি পেরিয়ে স্নাতক ডিগ্রী প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হয়। তো এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা অতিক্রম করে দেশের স্বনামধন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত।
আরেকজন নবীন শিক্ষার্থী তার অনূভুতি ব্যক্ত করে নলেন, আমাদের বড় ভাইয়া, আপু ও শিক্ষকরা অনেক ফ্রেন্ডলি। তারা আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে আমাদের কোনকিছুতে ভুল না হয়। এছাড়াও ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যের বিষয়ে তিনি জানান,উঁচু -নিচু টিলার সংমিশ্রনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে রয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ যা আমাকে মুগ্ধ করেছে। বিশেষ করে পাহাড়ের উপরিভাগে আমাদের একাডেমিক বিল্ডিংগুলো দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ।
নবীনদের চোখভরা স্বপ্ন এবং মনে অনেক আশার আলো লক্ষ করা যায়। নবীনদের অনেকের মুখে এই কথাটি বারংবার শোনা যাচ্ছে যে, দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সুযোগ পেয়ে তারা আনন্দিত। নবীন শিক্ষার্থীরা তাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে আসতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ক্যাম্পাসের সেই আড্ডাস্থলগুলোতে পুরাতনদের পাশাপাশি যোগ হয়েছে নতুন কিছু মুখ, যাদের মুখে দেখা যাচ্ছে সাফল্যের মিষ্টি হাসি। কেউ কেউ একসঙ্গে সেলফি তুলছে, কেউবা একসঙ্গে বসে খোশগল্প ও আড্ডায় মেতে উঠছে। নবীনরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিচিত্র ধরনের স্বপ্ন নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে এসেছে। এরাই তো আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১১.০০ টায় ভিসির দপ্তরে দ্বিতীয়বারের মতো নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে এক্সাম রুলস, প্রক্টরিয়াল রুলস, সেক্সচুয়াল হ্যারেসমেন্ট রুলস, লাইব্রেরি রুলস ও একাডেমিক ক্যালেন্ডার সম্বলিত একটি ‘বুকলেট’ প্রদান করা হয়।
লেখক: শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।