মার্চ ২২, ২০২৫

শনিবার ২২ মার্চ, ২০২৫

কুমিল্লার যে গ্রামে তৈরি হয় সুস্বাদু হাতে ভাজা মুড়ি

Rising Cumilla - Cumilla Barura, Muri
ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র রমজান মাসে ইফতারের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ মুড়ি। বিশেষ করে হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের প্রায় ৪০টি পরিবার এই হাতে ভাজা মুড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে।

রমজান মাসে এই মুড়ির চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায়, এখন তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে লক্ষ্মীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় বাড়িতে বাড়িতে এখন মুড়ি ভাজার ধুম পড়েছে। নারীরা কাঠের চুলায় মুড়ি ভাজছেন, কেউবা চালুন দিয়ে মুড়ি পরিষ্কার করছেন, আবার কেউবা বস্তায় ভরে সেলাই করছেন। পরিবারের ছোট-বড় সবাই এই কাজে হাত লাগিয়েছেন।

মুড়ি উৎপাদনকারী প্রদীপ পাল জানান, সারা বছরই তারা মুড়ি তৈরি করেন, তবে রমজান মাসে চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাদের হাতে ভাজা মুড়িতে শুধু লবণ পানি মেশানো হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তাই সচেতন মানুষ এই মুড়ি বেশি পছন্দ করেন।

আরেক মুড়ি উৎপাদনকারী শ্রীকৃষ্ণ পাল জানান, ‘বর্তমানে ২৫ থেকে ৩০টি পরিবার এই পেশা ধরে রেখেছে। জ্বালানি লাকড়ি আগে ১০০ টাকা মণ কিনতাম, এখন ২৫০ টাকা মণ কিনতে হয়। তা ছাড়া মুড়ির মোটা চাল বরিশাল থেকে আনতে হয়। এক কেজি চালের দাম ৪২ টাকা এরপর পরিবহন খরচ ও মুড়ি তৈরি করতে আরো সাত-আট টাকা খরচ হয়। বিক্রি করা হয় ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। এখন আর আগের মতো ব্যবসা নেই। শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে মাঝে মাঝে লোকসান গুনতে হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মূলত গিগজ ও টাপি নামের দুই ধরনের মুড়ি ভাজি। এই মুড়ি বাজারের মুড়ির চেয়ে একটু মোটা ও ভারী। দীর্ঘক্ষণ মচমচে থাকে।’

কুমিল্লার চকবাজারের মুড়ি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্মীপুর গ্রাম থেকে মুড়ি সংগ্রহ করছেন। হাতে ভাজা মুড়ির বিশেষ ক্রেতা রয়েছে এবং মেশিনে তৈরি মুড়ির চেয়ে এর চাহিদা এখনও বেশি।

লক্ষ্মীপুর গ্রামের তৈরি মুড়ি কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। রমজান মাসে এই গ্রামের মুড়ির কদর বেড়ে যাওয়ায়, স্থানীয় অর্থনীতিতে এর বিশেষ প্রভাব পড়ছে।