আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার গরু-ছাগল প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। গবাদি পশু সমৃদ্ধ এই উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন তালিকাভূক্ত ছোট-বড় মিলিয়ে কৃষক ও মৌসুমি ব্যবসায়ীর খামারে এসব পশু পালন করা হচ্ছে। হাট-বাজারের চেয়ে অনেকেই খামারে কেনাবেচাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
জানা গেছে, প্রতিবছর কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার কৃষক ও খামারিরা গরু, ছাগল মোটা-তাজাকরণে ব্যস্ত থাকেন। কোরবানী ঈদে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে গবাদি পশু জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করেন খামারি, প্রান্তিক কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দূর-দুরান্ত থেকেও ক্রেতারা এ উপজেলায় এসে স্থানীয় হাট-বাজার ছাড়াও খামার থেকে গরু কিনে নিয়ে যান। গত বছর ভারত থেকে পশু না আসায় দেশি গরুর চাহিদা ছিল ভাল। এ বছর কোরবানিকে সামনে রেখে দেশী গরু ও ছাগল মোটাতাজা করার শেষ পর্যায়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ভাল দাম পাবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩৭টির বেশি হাটে গবাদি পশু বেচাকেনা হবে। এছাড়া স্থানীয় বেপারিরা এলাকায় কৃষকদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে গরু ক্রয় করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করেন।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, মুরাদনগর উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার গো-খামার রয়েছে। এবার এসব খামারে মোটা-তাজা করা হয়েছে ২০ হাজারের অধিক গরু। হাজারখানেক ছাগল ভেড়াসহ প্রান্তিক কৃষক ও মৌসুমি বেপারি পর্যায়ে ২০ হাজারের অধিক গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
উপজেলার পিপিড়িয়াকান্দা গ্রামের শাহিন ও হেলাল বলেন, আমাদের ফার্মে ৩০টি ষাঁড় গরু রয়েছে। এগুলোকে গম, খেসারি, মসুরীর ভুসি, খৈল, ধানের কুড়া শুকনো খর ও কাঁচা ঘাস খাওয়ানো হয়। এতে গরুগুলো থাকে স্বাস্থ্যবান ও প্রাণবন্ত। এখানে কোনো রকম স্টেরোয়েড ব্যবহার হয় না। আমাদের খামারে ২৩০ থেকে সাড়ে ৯০০ কেজি ওজনের গরু রয়েছে। ১২টি গরু খামার থেকেই বিক্রি করছি।
রাজাচাপিতলা গ্রামের আব্দুল মাঈন ও হাজী আবুল হাসেম বলেন, কোরবানিকে ঘিরে আমাদের খামারে ৪০টি গরু মোটাতাজা করে প্রস্তুত করা হয়েছে।
মুরাদনগর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, এ বছর মুরাদনগর উপজেলায় ১৬ হাজার গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে। এ এলাকায় গবাদিপশু মোটা-তাজাকরণে কোন প্রকার ক্ষতিকর স্টেরোয়েড ব্যবহার হয় না। নিরাপদ গো-মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যে আমরা কৃষক ও খামারিদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, উদ্ধুদ্ধকরণ ও পরামর্শসহ মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, গতবছর কোরবানিতে মুরাদনগরের ২২টি ইউনিয়নে ৩৭টি কোবানির পশুর হাটবাজার বসেছিল। এ বছর পশুর হাট বাড়তে পারে। বিভিন্ন হাটে যেসব পশু বাজারজাত করা হবে, সেসব পশু সবল কিংবা রোগাক্রান্ত কিনা তা নিণয়ের জন্য প্রতিটি পশুর হাটে আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করবে।