কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে যৌতুক হিসেবে মোটরসাইকেলের দাবিতে এক গৃহবধূকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী বিরুদ্ধে।
সোমবার দুপুরে পৌর সদরের বাতুপাড়া গ্রামের মজুমদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মোজাম্মেল হক লাকসাম উপজেলার নাওটি গ্রামের মুন্সি বাড়ির আব্দুস সালামের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে বাতুপাড়া গ্রামের সালামত উল্ল্যাহ মজুমদারের মেয়ে খোদেজা আক্তার সোনিয়া পারিবারিক ভাবে পার্শ্ববর্তী উপজেলা লাকসাম নাওটি গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে মোজাম্মেল হক এর সঙ্গে শুভ বিবাহ হয়। বিয়ে পরে থেকে যৌতুক হিসেবে এক লাখ টাকা নিয়ে যায় মোজাম্মেল। পরে আরো টাকার জন্য প্রায় সময় মারধর করত মোজাম্মেল হক। এনিয়ে এলাকায় বেশ কয়েক বার সালিশ বৈঠক হয়।
সর্বশেষ কোরবানির ঈদের আগে সোনিয়ার পরিবারের কাছে একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। মোটরসাইকেল দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সোনিয়া উপর নেমে আসে নির্যাতন। একপর্যায়ে নির্যাতন সইতে না পেরে কোরবানির ঈদে আগে সোনিয়া তার বাপের বাড়ি বাতুপাড়া ছলে আসে।
সোমবার দুপুরে মোজাম্মেল হক তার শ্বশুর বাড়িতে এসে স্ত্রী সোনিয়াকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে ১৮ মাস বয়সী ছেলে সাদমান হোসেন মাহিরকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকায়বাসী তাকে আটক করে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর মা ছকিনা বেগম বলেন, দুপুরের দিকে মেয়ের জামাই তাদের বাড়িতে আসেন। তাকে নাস্তা দিয়ে রানা করতে চলে যান তিনি। হঠাৎ মারধরের শব্দ শুনে দৌড়ে এসে দেখেন জামাই তার মেকে মারধর করতেছে। এক পর্যায়ে নাতিকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী তাকে আরক করে। বিয়ের সময় এক লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছি। এখন সে একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। মোটরসাইকেল না দেওয়াই আজকে এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে।
এ বিষয়ে খোদেজা আক্তার সোনিয়া বলেন, তাদের অভাবের সংসার। বিয়ের সময় স্বামীকে এক লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেন। আরো টাকার জন্য প্রায় সময় তাকে মারধর করত। এনিয়ে এলাকায় বেশ কয়েক বার সালিশ বৈঠক হয়। সর্বশেষ সে আমার পরিবারের কাছে একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। এটি দিতে না পায়ার সে আমাকে আরো মারধর করে। এক পর্যায়ে আমি বাপের বাড়ি বাতুপাড়া ছলে আসি। আজকে আমাদের বাড়িতে এসে অনেক মারধর করে ছেলে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার মানুষ তাকে আটক করে।
স্থানীয় নুরুল ইসলাম বলেন, এ মেয়ে ঘটকালি করে তিনি বিয়ে দেন। এ পারিবার মোজাম্মেল হককে এক লাখ টাকা যৌতুক দেন। আরো টাকার জন্য মেয়েকে প্রায় সময় মারধর করত। এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েক বার সালিশ বৈঠক হয়। পরে মেয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসে। আজকে এসে শুনি মোজাম্মেল এ ঘটনা করেছে।
অভিযুক্ত মোজাম্মেল হক বলেন, ছেলে মাথা আঘাতের কথা শুনে তিনি শ্বশুর বাড়িতে আসেন। ছেলে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে। ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী ও শ্বাশুড়ি তাঁকে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে। পরে এলাকায় লোকজন দৌড়ে এসে ঘটনাটি দেখেন। আর যৌতুক বা মোটরসাইকেল বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানা তিনি।
নাঙ্গলকোট থানার ওসি দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, এখন প্রর্যন্ত কেউই অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।