বুধবার ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

কুমিল্লার দেবিদ্বারে স্কুল তৈরির নামে কৃষকের গাছ কাটার অভিযোগ

রাইজিং কুমিল্লা অনলাইন

Rising Cumilla - Farmer accused of cutting down trees in the name of building a school in Debidwar, Comilla
কুমিল্লার দেবিদ্বারে স্কুল তৈরির নামে কৃষকের গাছ কাটার অভিযোগ/ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় স্কুল প্রতিষ্ঠার নামে স্থানীয় এক কৃষকের ২০ শতাংশ পৈতৃক জমি দখল এবং ওই জমিতে লাগানো প্রায় ১৭৫টি বনায়নকৃত গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। 

ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৫ অক্টোবর উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সুলতানপুর গ্রামে নতুন একটি স্কুল স্থাপনের উদ্যোগ নেয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। কৃষক হাবিবুর রহমান জমি দিতে রাজি না হওয়ায় প্রথমে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২৫টি গাছ কেটে ফেলা হয়, পরে ২৫ অক্টোবর আরও ১৬০টি গাছ কেটে ভেকু দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়।

অভিযোগ দায়ের করার পর থেকেই হাবিবুর রহমান এবং তার পরিবার জীবননাশের হুমকি পাচ্ছেন। এই কারণে বর্তমানে তিনি সপরিবারে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আছেন।

ভুক্তভোগী কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, “আমার ২০ শতাংশ পৈতৃক জমি শাহীন ও তার সমর্থকরা জোর করে নিতে চায়। থানায় অভিযোগ করার পরও তারা ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে। এখন জীবন বাঁচাতে পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।”

হাবিবুর রহমানের আত্মীয় মো. সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, স্কুল প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও, অভিযুক্ত পক্ষের মূল উদ্দেশ্য হলো খাসজমি দখল করে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য হাবিবুর রহমানের জায়গা নিয়ে একটি মাছের প্রজেক্ট তৈরি করা।

অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশের দাবি, গ্রামের ৯৯ শতাংশ মানুষের সম্মতিতে স্কুল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে কৃষক হাবিবুর রহমানকে বিনিময়ে ১৭ শতাংশ জমি দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়টি নিয়ে আগামী ৩০ অক্টোবর দেবিদ্বার থানায় উভয় পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে স্কুল স্থাপন উদ্যোগের উদ্যোক্তা শাহনেওয়াজ শাহীন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে স্কুল করতে চাই। হাবিবুর রহমানের জমি কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিছু লোকের কুপরামর্শে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যাবে।”

দেবিদ্বার থানার ওসি শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। উভয় পক্ষকে আগামী শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) থানায় ডাকা হয়েছে। যদি বৈঠকে সমাধান না হয়, তবে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গাছ কাটার অভিযোগ প্রসঙ্গে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাকিবুল ইসলাম জানান, “গাছ কাটার অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি/এসিল্যান্ড) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

আরও পড়ুন