মঙ্গলবার ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ‘চোর সন্দেহে’ যুবককে মধ্যযুগীয় নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে 'চোর সন্দেহে' যুবককে মধ্যযুগীয় নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল/ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় এক যুবককে ‘মুরগী চোর’ অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রকাশ্যে বর্বর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের উত্তর যাত্রাপুর গ্রামে এই অমানবিক ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও রোববার (৫ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয় এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি ওঠে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির ভিত্তিতে রোববার দুপুরে তাৎক্ষণিক অভিযানে মূল হোতা আবুল হাসেম নামের এক ব্যক্তিকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার নুরে আলম-এর পরিবারের সঙ্গে একই গ্রামের আবুল হাসেমের পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরেই শনিবার ভোর রাতে নুরে আলম টর্চলাইট নিয়ে গ্রামে মাছ ধরতে যান। সেই সময় আবুল হাসেম তাকে আটক করেন এবং ‘মুরগী চুরি করতে এসেছেন’—এমন মিথ্যা অপবাদ দেন। এরপর তিনি নুরে আলমকে আটক করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান।

শনিবার সকালে আবুল হাসেমের বাড়িতে গাছের সঙ্গে নুরে আলমকে বেঁধে রাখা হয়। এরপর আবুল হাসেমের নির্দেশে তার মামাতো ভাই সোহেল ও প্রতিবেশী স্বপন তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, নির্যাতনের শিকার ওই যুবক বাঁচার জন্য করুণভাবে ‘মা… মা’ বলে চিৎকার করছেন। অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, এ সময় স্থানীয় বহু নারী-পুরুষ উপস্থিত থাকলেও কেউ তাঁকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় নুরে আলমকে উদ্ধার করেন এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন জানান, রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি আমাদের নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ফোর্স নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং ঘটনার মূল হোতা আবুল হাসেমকে আটক করি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, জমি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে চলমান বিরোধের জের ধরেই ওই যুবককে মুরগী চোর সন্দেহে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতনের শিকার নুরে আলম বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় জড়িত অন্য অভিযুক্তদেরও আটকের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুন