এপ্রিল ১৩, ২০২৫

রবিবার ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

কুমিল্লার চান্দিনায় মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মা-মেয়েকে মারধর, নিয়ে গেলেন গরু-ছাগল

Mother beats daughter over false accusations in Chandina, Comilla, takes away cow and goat
ছবি: প্রতিনিধি
কুমিল্লার চান্দিনায় দৈনিক মজুরীতে রাস্তায় মাটি কাটার এক অসহায় নারীকে অসামাজিক কাজের অপবাদ দিয়ে তাকে ও তার মাকে বেধরক মারধরের করেছে প্রতিপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে চান্দিনা উপজেলার বরকরই ইউনিয়নের বরকরই গ্রামের বাদশাহ বাড়িতে ওই অমানবিক ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম রহিমা বেগম (৩৪)।
প্রতিপক্ষের লোকজন এসময় তার বয়োবৃদ্ধ মাতা শ্রীমতি (৬৫) কেও মারধর করে আহত করে।
সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়- একই বাড়ির মো. শহিদ এর ছেলে খোকন মিয়া দীর্ঘদিন ধরে রহিমা বেগমের ঘর-বাড়ি দখল করার পাঁয়তারা করছেন। খোকন সম্পর্কে তার মামাত ভাই। রমজান মাসে রহিমা বেগম শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে পাশ্বর্বর্তী বাড়ির একজন পুরুষকে জড়িয়ে অসামাজিক কাজের অপবাদ তুলে খোকন। এলাকাবাসীকে রহিমার বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলে। বৃহস্পতিবার খোকন এর নেতৃত্বে কয়েকজন দুষ্কৃতকারী রহিমা ও তার মাকে মারধর করে। এসময় খোকন তাদের ঘর থেকে ১টি গরু একটি বাছুর এবং ২টি ছাগল লুট করে নিয়ে যায়।
ভক্তভোগী রহিমা বেগম বলেন, ১৫ বছর যাবৎ স্বামী না থাকায় আমি রাস্তার কাজ করে কোন রকমে মা এবং মেয়েকে নিয়ে জীবন যাপন করছি। গত ৭-৮ মাস ধরে কাজ বন্ধ থাকায় পাশের একটি বাড়িতে রান্না-বান্নার কাজ করি। ঈদের আগে আমি শারীরিকভাবে হঠাৎ অসুস্থ হলে তখন তারা ওই বাড়ির পুরুষকে জড়িয়ে আমাকে অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে। বৃহস্পতিবার সকালে খোকন আমাকে এবং আমার মাকে মেরে বাছুর সহ ১টি গরু, ২টি ছাগল নিয়ে যায় এবং বসত ঘরে তালা দিয়ে দেয়।
পাশবর্তী বাড়ির আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সকালে রহিমার মা তাদেরকে মারধর করার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। এর আগে রহিমার বিষয়ে যে অপবাদ উঠেছে তা আমি শুনেছি। কিন্তু ওই ঘটনার কোন প্রমাণ আমরা পাইনি।’
অভিযুক্ত খোকন এর সাথে বাড়িতে গিয়ে এবিষয়ে জানতে চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
খোকনের চাচাতো ভাই সাইফুল মারধরের বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান। তবে, গরু-ছাগল নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সত্য বলে স্বীকার করেন।
এব্যাপারে পল্লী চিকিৎসক শিশির দেবনাথ বলেন- ‘আমার বাবা পল্লী চিকিৎসক। তিনি আমাকে স্যালাইন ও ইনজেকশন পুষ করতে বলেছিলেন। আমি সেটাই করেছি। পেশেন্টের রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিল। জরায়ু ইনফেকশন থেকেও রক্ত ক্ষরণ হতে পারে। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।’ তিনি আরও বলেন- আমি মহিলাকে এমবিবিএস ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দিয়েছিলাম।
এব্যাপারে বরকরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মজুমদার শিপন জানান, এব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ শাহিনুল ইসলাম জানান, আমি ওই ঘটনা সম্পর্কে এই প্রথম শুনলাম। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।