মঙ্গলবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৫

কুমিল্লায় হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে লাশ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

রাইজিং কুমিল্লা অনলাইন

Rising Cumilla -Dhaka-Chittagong highway blocked with bodies demanding arrest of Comilla killers
কুমিল্লায় হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে লাশ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ/ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় স্ত্রীর সাবেক প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে আবু বক্কর প্রকাশ আসিফ (২৬) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে নিহতের মরদেহ নিয়ে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নিহত আসিফ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের কেন্ডা গ্রামের মরহুম ফটিক মিয়ার ছেলে। গত ৮ নভেম্বর আসিফ সদর দক্ষিণ উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামে অবস্থিত তাঁর শশুড় বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানেই বাপ্পি ও পারভেজ নামে দুই যুবক তার ওপর অতর্কিত ও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত চালায়।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাঁকে সদর দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

নিহত আসিফের ছোট ভাই আরাফাত হোসেন জানান, বাপ্পি নামের যুবকের সঙ্গে আসিফের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার সুইটির (১৯) বিয়ের আগে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

পরিবারের সদস্যরা ধারণা করছেন, এই হত্যাকাণ্ডে আসিফের স্ত্রী সুইটিও জড়িত থাকতে পারেন। তাদের অভিযোগ, সুইটি আদালতে উল্টো ছুরিকাঘাতের একটি মামলা দায়ের করে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছেন।

হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার সকালে নিহতের মরদেহ নিয়ে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাতে থাকেন। অবরোধের ফলে মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে পুলিশ এসে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা অবরোধ তুলে নেন।

মানববন্ধনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বক্তব্য রাখেন নিহত আসিফের মা আলেয়া বেগম, নানি রুপিয়া বেগম সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ— তোফায়েল আহমেদ জুয়েল, এডভোকেট জাহিদুল ইসলাম সুমন, মোজাম্মেল হক অপু, শহীদ মিয়া, আনোয়ার হোসেন, এয়াছিন মিয়া, মফিজ মেম্বার, রফিকুল ইসলাম, রাশেদ মিয়া প্রমূখ।

সুমাইয়া আক্তার সুইটির বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডে আমার মেয়ে জড়িত নয়। আমার মেয়ের বিয়ের আগে কারও সঙ্গে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। আমরাও হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ জানান, মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি শান্ত করে। তিনি আরও জানান, যেহেতু হত্যাকাণ্ডটি সদর দক্ষিণ থানার আওতাধীন, অভিযুক্তরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। তবে পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সেলিমও নিশ্চিত করেছেন যে, দোষীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

আরও পড়ুন