কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ইকতার হোসেনকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
নিহত সিএনজি চালক ইকতার (৩২) উপজেলার কালাইরকান্দি গ্রামের আঃ রহমান বাবুর্চীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায়ে দেন। আসামিরা পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি নুরুল ইসলাম এই তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- দাউদকান্দি উপজেলার কালাইরকান্দি গ্রামের নলি মিয়ার ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর (৩০), একই উপজেলার জুরানপুর গ্রামের ডিপটি’র ছেলে সুমন (২২) দেবিদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে ইমরান (১৮) এবং একই গ্রামের রুবেল (২৩)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সিএনজি অটোরিকশাচালক ইকতার হোসেন রাতে বাড়িতে ফিরে না আসায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাঁর পরিবারের লোকজন।
পরদিন দাউদকান্দি থানা পুলিশের মাধ্যমে জানা যায়, দুইজন সিএনজি অটোরিকশা ছিনতাইকারীকে দাউদকান্দির পুটিয়া বেকিনগর হিমালয় মৎস্য প্রজেক্টের মাঝামাঝি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর স্থানীয় জনগণ আটক করে গণধোলাই দিয়ে থানা পুলিশকে খবর দিয়েছে।
ওই ছিনতাইকারীরা নিখোঁজের দিন রাতেই যাত্রীবেশে সিএনজিতে উঠে পথিমধ্যে গাড়ি থামিয়ে ভিকটিম ইকতারকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে।
পরে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে লাশ গুম করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনগণ তাদের আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেয়।
এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল নিহতের বড়ভাই মোঃ আক্তার হোসেন বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে একই বছরের ২৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। রায় ঘোষণাকালে সকল আসামিরা আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
রাষ্টপক্ষের কৌশলী আইনজীবী অতিঃ পিপি মোঃ নুরুল ইসলাম এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আশা করছি মহামান্য হাইকোর্ট এ রায় বহাল রেখে দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করবেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট এম. এ আদনান ও এডভোকেট ফেরদৌস আক্তার বলেন, রায়ের কপি হাতে পেলে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করবে।