জানুয়ারি ২৭, ২০২৫

সোমবার ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫

কুমিল্লায় মায়ের সামনে ছেলেকে খুঁটিতে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় মায়ের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে ইমরান হোসেন (২১) নামের যুবককে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পরদিন শনিবার ওই যুবককে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

শুক্রবার রাতে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে এ ঘটনায় ওই যুবকের মা ১৮ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করেছেন বলে জানান চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।

এ বিষয়ে ইমরানের মা আফরোজা বেগম জানান, শহিদুর রেজা রতন মিয়াজী চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এলাকায় তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তার সামাজিক অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রায় সময়ে প্রতিবাদ করত ইমরান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হুমকি দিয়ে আসছিল ওই বাহিনীর সদস্যরা।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আফরোজা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পরে তারাশাইল বাজার বিকাশ দোকান থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফেরার পথে আমার ছেলেকে একা পেয়ে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর শুরু করে। আমার ছেলের চিৎকার শুনে আমি এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। এ সময়ে তারা মসজিদের সামনের একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে আমার সামনেই প্রায় তিন ঘণ্টা ইমরানের ওপর নির্মম নির্যাতন করে। এরপর মৃত ভেবে আমার ছেলেকে ফেলে রেখে যায়। তারা আমার ছেলের সঙ্গে থাকা টাকাও নিয়ে গেছে। আমি ওই সন্ত্রাসীদের বিচার চাই।

আত্মীয়স্বজন ইমরানকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাবেদ হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাত প্রায় ১২টা ২০ মিনিটে গুরুতর অবস্থায় ইমরান হোসেনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমরা তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি।’

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হিলাল উদ্দিন বলেন, ভাইরাল সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের সংরক্ষণে আছে। যুবকের মা বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ফুটেজ ভাইরাল হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত সবাই এলাকা ছেড়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।