শনিবার ২৩ আগস্ট, ২০২৫

কুমিল্লায় মায়ের দেওয়া কিডনিতে জীবন পাওয়া ছেলের ওপর প্রতিবেশীর হামলা, হাসপাতালে মৃত্যু

রাইজিং ডেস্ক

Neighbor attacks son who survived kidney donation in Comilla, dies in hospital
সুজনকে কিডনি দিয়েছিলেন তার মা খোকনা বেগম/ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় প্রতিবেশীর হামলায় সুজন (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুই বছর আগে সুজনকে বাঁচাতে কিডনি দিয়েছিলেন তার মা খোকনা বেগম। এলাকার মানুষের সহযোগিতায় চিকিৎসা খরচ চালিয়েও শেষ পর্যন্ত সন্তানের জীবন রক্ষা করতে পারলেন না তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের পূর্বহুড়া গ্রামে। নিহত সুজন ওই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।

গতশুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন সুজন। প্রায় দুই বছর আগে মায়ের দেওয়া কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তিনি নতুন জীবন ফিরে পান।

স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন তিনি। কিন্তু চলতি বছরের ২৩ মে পারিবারিক বিষয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে হামলার শিকার হন সুজন। হামলার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

নিহতের মা খোকনা বেগম আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “ছেলের জীবন বাঁচাতে আমি কিডনি দিয়েছি, মানুষের কাছে হাত পেতে চিকিৎসার খরচ চালিয়েছি। তবুও শেষ পর্যন্ত আমার ছেলেকে বাঁচাতে পারলাম না। প্রতিবেশীর হামলায়ই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে”

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক মো. সোলাইমান জানান, গত ২৩ মে সন্ধ্যায় তার দোকানের সামনে সুজন ও প্রতিবেশী রোকনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে রোকন ও জসীম তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং কিডনি প্রতিস্থাপনের স্থানে আঘাত করে। এরপর থেকেই সুজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।প্রতিবেশী জহুর মিয়ার ছেলে রোকন ও আব্দুল আলীর ছেলে জসীম উদ্দীনের হামলায় আহত হয়ে সুজনের এমন মৃত্যুতে মর্মাহত এলাকাবাসী।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, “আমরা এলাকার মানুষ তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলাম এবং তার মা কিডনি দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিবেশীর হামলার পর তার অবস্থা আবারও খারাপ হয়ে যায় এবং অবশেষে সে মারা যায়।” সুজনের এমন মৃত্যুতে এলাকাবাসী মর্মাহত এবং তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক জানান, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন